বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অশালীন বক্তব্য: বিএনপি নেতা ইশরাকের ক্ষমা প্রার্থনা

  •    
  • ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৬:৪৬

‘দর্শকশ্রোতা যারা রয়েছেন, বিশেষ করে যাদের আমার প্রতি একটা প্রত্যাশা রয়েছে যে একটি সুস্থ ধারার রাজনীতি হয়তোবা আমরা সূচনা করতে পারি। তাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আপনারা আমাকে এই একটি ভুলের জন্য ক্ষমা করে দেবেন এবং এটিকে দিয়ে আমার সার্বিক কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন না করার জন্য আমি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।’

সদ্য তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ডা. মুরাদ হাসানকে গালি দিয়ে দেয়া বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। জানান, গালি দিয়ে বক্তব্য দেয়ায় তিনি লজ্জিত। এটা কোনোভাবেই উচিত হয়নি।

রোববার রাতে এক ভিডিওবার্তায় এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি। জানান, সেই বক্তব্য দিয়ে বাড়ি ফেরার পরে তার মাও বলেছেন, এই ধরনের কথা বলা তার উচিত হয়নি।

ইশরাক বলেন, ‘কয়েক দিন আগে আমাদের দলীয় একটি সভা হচ্ছিল ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে। সেখানে বক্তব্য দিতে গিয়ে আমি একপর্যায়ে আমার আবেগকে ধরে রাখতে পারিনি। সেখানে আমি রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত অশালীন কিছু শব্দ ব্যবহার করেছি, সদ্য বহিষ্কৃত একজন প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে।’

তিনি বলেন, ‘যারা আমার বক্তব্যগুলো নিয়মিত দেখেন, আমাকে পছন্দ করেন, অনেক মুরব্বিরা রয়েছেন, নতুন প্রজন্মের অনেক ভাই-বোন রয়েছেন। আমি সবার কাছে মূলত ক্ষমাপ্রার্থী যে, আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি আগামীতে চেষ্টা করব এ ধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে।’

ওই বক্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে ইশরাক বলেন, ‘আমি নিজেও খুব লজ্জিত ছিলাম, মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আমার পিতৃতূল্য ও অভিভাবক বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আরও সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ছিলেন, তাদের মধ্যে ডাকসুর সাবেক ভিপি ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালামসহ দর্শক সারিতেও অনেক মুরব্বি ছিলেন।’

সম্প্রতি প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো মুরাদ হাসান একটি অনলাইন সাক্ষাৎকারে এসে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তার নাতনি জাইমা রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন।

বিএনপি এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়। তাদের প্রতিবাদের মধ্যে বিএনপির দুই নেতার দুটি বক্তব্য ভাইরাল হয়। এর মধ্যে ইশরাক একটি প্রাণীর সঙ্গে তুলনা করেগালি দেন মুরাদকে। অন্যদিকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। ভারতীয় সরকার প্রধানের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্কের অশালীন ইঙ্গিত করে কথা বলেন তিনি।

ক্ষমতাসীন দল ও নেতা-কর্মীরা বিএনপির এই দুই নেতার শাস্তি দাবি করে আসছিল। এর মধ্যে দলটির পক্ষ থেকে বিবৃতিতে আলালের বক্তব্যকে ‘ন্যায়সঙ্গত সমালোচনা’ উল্লেখ করেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে ইশরাকের বক্তব্যের বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।

ভিডিওবার্তায় প্রয়াত বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার ছেলে তার সেই বক্তব্যের পেছনে কোনো অযুহাত দেখাননি। বলেন, ‘আমি এটা কোনো অজুহাত হিসেবে বলতে চাচ্ছি না। জাস্ট প্রেক্ষাপটটা বলতে চাচ্ছি। আমি ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে সেই ব্যক্তির (ডা. মুরাদ হাসান) একটা ভিডিও শুনছিলাম, সেখানে আমাদের কারাবন্দি নেত্রী খালেদা জিয়া, আমরা স্পর্শকাতর অবস্থায় বিএনপির নেতাকর্মীরা রয়েছি। সেই মুহূর্তে এ কথাগুলো আমাদের খুবই আঘাত হানে এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। এটি কোনোভাবে কাম্য নয়।

‘আমরা নতুন প্রজন্ম যারা রাজনীতিতে আসছি, আমরা এটি বারবার বলে আসছি যে রাজনৈতিক শিষ্টাচার পুনঃপ্রতিষ্ঠা হওয়া উচিত। একে অন্যের প্রতি সহনশীল এবং শ্রদ্ধা নিয়ে কথা বলা উচিত। ওই দিন আমার বক্তব্য শেষ করার পর আমি নিজেই বিব্রতবোধ করছিলাম, যে এতগুলো মুরব্বি এবং টিভি ক্যামেরার সামনে আমি এই শব্দ ব্যবহার করেছি। তখন আমি অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করি। আমি বাসায় ফেরার পর আমার মা আমাকে বলেন, এটি একটি অত্যন্ত গুরুতর ভুল হয়েছে আমার দ্বারা।’

ইশরাক বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে আমি আমাদের দলীয় মহাসচিবসহ অন্য নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সরাসরি দেখা করে তাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছি এবং এই ভিডিওর মাধ্যমে দর্শকশ্রোতা যারা রয়েছেন, বিশেষ করে যাদের আমার প্রতি একটা প্রত্যাশা রয়েছে যে একটি সুস্থ ধারার রাজনীতি হয়তোবা আমরা সূচনা করতে পারি। তাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আপনারা আমাকে এই একটি ভুলের জন্য ক্ষমা করে দেবেন এবং এটিকে দিয়ে আমার সার্বিক কর্মকাণ্ড মূল্যায়ন না করার জন্য আমি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘ডা. মুরাদ হাসান দেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করেছেন। তাকে প্রতিটি বাহিনীর নিজস্ব রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত ছিল বলে আমি মনে করি। আমাদের গণমাধ্যম এই রকম মেরুদণ্ডহীন হয়ে গেছে, এটা দুঃখজনক, লজ্জাজনক এবং শঙ্কার কারণ।’

ইশরাক আরও বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে দাঁড়িয়েছি। আমাদের আন্দোলন বৃথা যেতে দেব না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আবারও একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।’

এ বিভাগের আরো খবর