পাঠকপ্রিয় থ্রিলার সিরিজ মাসুদ রানার ২৬০টি বইয়ের লেখক আনোয়ার হোসেন নন, সেগুলো শেখ আব্দুল হাকিমের বলে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে ‘কুয়াশা সিরিজের’ ৫০টি বইয়ের লেখকও শেখ আব্দুল হাকিম বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।
মাসুদ রানা ও কুয়াশা সিরিজের এ ৩১০ বইয়ের লেখক স্বত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা আইনি বিরোধ নিষ্পত্তি করে সোমবার এ রায় দেয় বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এ নিয়ে রুলের শুনানি শেষ হয় গত বৃহস্পতিবার। রায়ের জন্য দিন রাখা হয় ১৩ ডিসেম্বর।
সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত মাসুদ রানা সিরিজের এখন পর্যন্ত ৪ শতাধিক বই প্রকাশিত হয়েছে। কাজী আনোয়ার হোসেনের নামে বইগুলো প্রকাশিত হলেও শেখ আব্দুল হাকিমসহ আরও বেশ কয়েকজন লেখক এগুলো 'গোস্ট রাইটার' (ছদ্ম লেখক) হিসেবে লিখেছেন।
অপর জনপ্রিয় সিরিজ কুয়াশা সিরিজের মোট ৭৮টি বই প্রকাশিত হয়েছে।
মামলার নথিপত্র থেকে জানা যায়, শেখ আব্দুল হাকিম ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০ ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক স্বত্ব দাবি করে সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে অভিযোগ দাখিল করেন।
এক বছরেরও বেশি সময় আইনি লড়াই শেষে গত বছরের ১৪ জুন কপিরাইট অফিস ওই বইগুলোর লেখক হিসেবে শেখ আবদুল হাকিমের পক্ষে সিদ্ধান্ত দেয়। এ সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে কাজী আনোয়ার হোসেন হাইকোর্টে রিট করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করে।
রুলে এখতিয়ারবর্হিভূত হওয়ায় কপিরাইট অফিসের ওই সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। সংস্কৃতি সচিব, কপিরাইট অফিস, রেজিস্ট্রার অফ কপিরাইটস এবং কপিরাইট বোর্ডকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী বলেছিলেন, ‘শেখ আবদুল হাকিমের দাবি করা মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি বইয়ের মধ্যে একটি এবং কুয়াশার ৫০টি বইয়ের মধ্যে ছয়টিতে লেখক হিসেবে তার নামে কপিরাইট করা আছে। বাকিগুলোর কপিরাইট করা না থাকলেও সেগুলো যে তার লেখা তা তিনি প্রমাণ করেছেন। তবে কপিরাইট অন্তর্ভুক্তির কারণে তাকে প্রতিটি বইয়ের জন্য আলাদা করে আবেদন করতে হবে। এরপর প্রতিটি বইয়ের লেখক হিসেবে তার নাম যাওয়ার পাশাপাশি, কপিরাইটও তার হয়ে যাবে।’