বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘হাজার বছর’ ধারণ করে দাঁড়িয়ে প্রকাণ্ড শিমুল

  •    
  • ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ১০:০০

স্থানীয় আব্বাস আলী বলেন, ‘এর সঠিক বয়স আমরা বলতে পারব না। আমাদের দাদাও বলতে পারে নাই। আমাদের পাঁচ পুরুষের আগের এ গাছ। তবে আনুমানিক ১২০০ বছর হবে।’

শেরপুরের নকলার নারায়ণখোলা গ্রামে বছরের পর বছর সভ্যতার ইতিহাস ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে প্রকাণ্ড এক শিমুলগাছ।

প্রায় ১০০ ফুট উচ্চতার এই গাছ টিকে আছে প্রায় ১২০০ বছর ধরে। যদিও অনেকের ধারণা, প্রায় তিন হাজার বছর ধরে টিকে আছে এটি।

মানুষের মতো গাছও প্রবীণ হয়। তার গায়ে বার্ধক্য ঘর বাঁধে; আসে মৃত্যুও। নারায়ণখোলার এই গাছটিও বয়সের ভারে এখন প্রবীণ। কালের সাক্ষী এই গাছটিকে টিকিয়ে রাখার দাবি স্থানীয়দের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৪২ গজ ব্যাস নিয়ে এই গাছটির অবস্থান। দেখলে মনে হয় শিকড়গুলো বেড়ার মতো ঘিরে আছে গাছটিকে। এলাকার লোকজন সে জন্য এটিকে বেড় শিমুলগাছ বলেই ডাকে।

এই গাছের কাছেই বাড়ি আব্বাস আলীর। তিনি বলেন, ‘এর সঠিক বয়স আমরা বলতে পারব না। আমাদের দাদাও বলতে পারে নাই। আমাদের পাঁচ পুরুষের আগের এ গাছ। তবে আনুমানিক ১২০০ বছর হবে।’

আব্বাস জানান, এই গাছ ঘিরে একসময় পূজা-অর্চনা হতো। এর গায়ে নাকি পাওয়া যায় নানা প্রাণীর ছাপ।

তিনি বলেন, ‘আগে এই জায়গায় প্রত্যেক বছর অনুষ্ঠান অইত। এহন আর অয় না। এ গাছটার মধ্যে গাছের কাণ্ডের পশ্চিম পাশে হাতি, উত্তর পাশে নৌকার বৈঠা ও সাপ আর টিয়া, কুমিড়ের ছাপও আছে।

‘আগে তো গাছের একটা ডাল ছিল, যেটা ধরে নাড়া দিলে পুরা গাছ নড়ত। ওইটা ভেঙে গেছে।’

এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, এই গাছ দেখতে আগে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসতেন। এখনও আসে, তবে আগের চেয়ে কম।

তিনি বলেন, ‘এই গাছ দেহার জন্য আইয়া অনেকেই মানত হিসেবে মুরগি, খাসি জবো কইরা খিচুরি পাক করে খাওয়ায়। এহন দু-তিন বছর দইরা অয়না। আস্তে আস্তে গাছটা নষ্ট অইতাছে। তাই এহন মানুষ আসা কইমা গেছে। আমরা চাই গাছটা বাঁচাইয়া রাহা হউক।’

স্থানীয় শহিদ মিয়া জানান, প্রশাসনের অবহেলা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ঐতিহ্যবাহী বেড় শিমুলগাছটির অস্তিত্ব হুমকিতে পড়েছে। এর উপবৃক্ষগুলো মারা যাচ্ছে, বড় বড় ডাল ভেঙে পড়ছে।

গাছ দেখতে এসেছেন পাশের গ্রামের সোহাগ মিয়া। তিনি বলেন, ‘গাছটা দেখে আমার খুব ভালো লাগল। তবে এখানে আসার রাস্তাটা খুবই খারাপ। রাস্তাটা পাকা করা দরকার। এই গাছটি যেন বেঁচে থাকে সে জন্যও উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।’

ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একটি গাছের বয়স অনেক বছর হতে পারে। অনেক গাছের বয়স আমাদের কাছেও অবিশ্বাস্য হয়।

‘অশ্বত্থ বা বটজাতীয় গাছ তিন হাজার বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচতে পারে। বর্তমানে শ্রীলঙ্কায় একটি গাছ আছে, যা ২২৫০ বছর পুরোনো। সেখানে ধর্মীয় কাজে সেটি ব্যবহার করা হয়। বাইরে যেহেতু আছে, কাজেই বাংলাদেশেও হতেই পারে।’

জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোমিনুর রশীদ বলেন, ‘আমরা এখানে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য কাজ করব। এখানে আসার সড়কটি নির্মাণের ব্যবস্থা নেয়া হবে। গাছটি বাঁচানোর কোনো উপায় আছে কি না, তাও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে দেখব।’

এ বিভাগের আরো খবর