নির্দেশনা আসার পরও লক্ষ্মীপুরে ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু করতে পারেনি জেলা খাদ্য বিভাগ। কবে তা শুরু হবে, তাও নিশ্চিত হতে পারেননি কৃষকরা।
জেলায় এবার ধান উৎপাদন হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার টন। সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ করা হবে ৪ হাজার ৬০৯ টন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার জেলার পাঁচটি উপজেলায় আমন ধানের আবাদ হয়েছে ৮১ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু চাষ হয়েছে ৫১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে, যা গত বছরের চেয়ে ৯ হাজার ৪০০ হেক্টর বেশি।
জেলা খাদ্য গুদাম সূত্রে জানা যায়, এবার সরকারিভাবে কৃষকদের কাছ থেকে ২৭ টাকা কেজি ও ১ হাজার ৮০ টাকা মনে ৪ হাজার ৬০৯ টন ধান এবং ৪০ টাকা কেজিতে ৩ হাজার ৬০১ টন চাল কেনার কথা রয়েছে।
সে অনুযায়ী ৭ নভেম্বর থেকে ধান সংগ্রহ শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু তালিকা প্রস্তুত না হওয়ায় ধান সংগ্রহ করা যাচ্ছে না।
সদর উপজেলার চর রুহিতার ধান চাষি সলিম উদ্দিন ও তোফায়েল আহমদ জানান, ৭ নভেম্বর থেকে ২৭ টাকা কেজিতে প্রতি মন ১ হাজার ৮০ টাকায় কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করার কথা থাকলেও তা শুরু করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। ইতিমধ্যে কয়েকবার খাদ্যগুদামে এসে ফিরে যেতে হয়েছে তাদের। খাদ্য বিভাগের কাছে ধান বিক্রি করতে নানা শর্ত মানতে হয় কৃষকদের। রয়েছে নানা বিড়ম্বনা। অথচ বাজারে প্রতি মন ধান বিক্রি করা যায় বেশি দামে। তাই কৃষকের দিকে তাকিয়ে ধানের দাম বাড়ানো এবং শর্ত কমিয়ে ধান সংগ্রহের দাবি কৃষকদের।
কমলনগরের মতিরহাট এলাকার সিরাজ উদ্দিন ও সদর উপজেলার কুশাখালী গ্রামের কৃষক মানিক মিয়া জানান, এবার আমনের ভালো ফলন হয়েছে। এতে চাষিরা খুবই খুশি। সার কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় প্রতি মন ধানের পেছনে খরচ পড়ে ১ হাজার ৩০০ টাকা। কিন্তু বাজারে প্রতি মন ধান বিক্রি করতে গেলে দাম পাওয়া যায় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা। এতে করে লোকসানের মুখে পড়তে হয় কৃষকদের।
এদিকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মংখ্যাই মারমা বলেন, কৃষকের তালিকা চূড়ান্ত না হওয়ায় ধান সংগ্রহ শুরু করতে দেরি হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে ধান সংগ্রহ শুরু করা হবে। পাশাপাশি ধানের দাম ও চালের দাম বাড়ানোর জন্য একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত পেলে সে অনুযায়ী কাজ করা হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. জাকির হোসেন জানান, এবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে বৃষ্টিতে সামান্য ধানের ক্ষতি হলেও উৎপাদন ব্যাহত হবে না। এবার ধানের উৎপাদন হবে ৩ লাখ ৩০ হাজার টন। ইতিমধ্যে কৃষকের তালিকা তৈরি করে খাদ্য গুদামে পাঠানো হয়েছে।