বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এবার আইভীর সঙ্গে লড়াইয়ের শেষ দেখবেন তৈমূর

  •    
  • ১২ ডিসেম্বর, ২০২১ ২২:১৬

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে কোনো ঘোষণা নেই বিএনপির কেন্দ্রের। তবে দলটির তিন জন নেতা এরই মধ্যে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন। সোমবার সংগ্রহ করবেন ২০১১ সালে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার। তবে সেই নির্বাচনে শামীম ওসমান ও আইভীকে মাঠে রেখে ভোটের আগের দিন সরে দাঁড়াতে হয় তাকে। এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আইভীকে হারানোর স্বপ্ন দেখছে তিনি।

এক দশক আগে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে যে লড়াই জমেনি, সেটি আবার দেখা যেতে পারে।

২০১১ সালের সেই নির্বাচনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ শামীম ওসমান বা সেলিনা হায়াৎ আইভী- সমর্থন জানায়নি কাউকে। অন্যদিকে বিএনপির সমর্থনে ভোটে ছিলেন তৈমূর আলম খন্দকার।

তবে ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস মেলেনি। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠা শামীম-আইভীকে লড়াইয়ে রেখে ভোটের আগের দিন সরে দাঁড়ান তৈমূর। অনেকটা অবাক করার মতো সেই সিদ্ধান্তের পেছনে বিএনপির ‘শামীম ওসমান ঠেকাও’ ইচ্ছাটাই প্রকাশ পেয়েছিল।

আইভীর এক লাখ ভোটে জয়ে বিএনপির স্থানীয় সমর্থকরা খুব একটা হতাশ ছিলেন-এমন নয়। বরং ভোটের প্রচার চলাকালে তৈমূরকে নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা তৈরি না হওয়ার পরে শামীম ওসমান এক লাখ ভোটে হেরে যাওয়ায় স্বস্তিতেই ছিল বিএনপি সমর্থকরা।

২০১৬ সালের পরের নির্বাচন হয় দলীয় প্রতীকে। এবার আওয়ামী লীগ নৌকা তুলে দেয় আইভীর হাতে। তবে তৈমূর চাইলেও সেবার তিনি দলের সমর্থন পাননি। বিএনপি ধানের শীষ তুলে দেয় দলের আইনজীবী সেনা সাখাওয়াত হোসেন খানের হাতে।

সে বছর আইভী জেতেন ৮০ হাজারেরও বেশি ভোটে। এবার তার চোখ ‘দানে দানে তিন দানে।’

প্রথমবার ভোটে অংশ নিয়ে সরে যাওয়া, দ্বিতীয়বার প্রাণপণ লড়াই করেও পেরে না উঠা বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের চারজন নেতা ভোটে আগ্রহী। বিএনপি কাউকে ধানের শীষ দেবে না- এমন সিদ্ধান্ত আগেভাগেই জানিয়ে দেয়ার পরও স্বতন্ত্র হিসেবে ভোটে লড়তে এরই মধ্যে তিনজন মনোনয়ন ফরম তুলেছেন, যাদের একজন গতবার ধানের শীষের প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান।

সোমবার মনোনয়ন কিনতে যাচ্ছেন ২০১১ সালের প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার, যিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক।

২০০৬ সালে ক্ষমতা থেকে দূরে থাকার পর রাজনীতিতে বেকায়দায় পড়া বিএনপি চলতি বছর পৌর নির্বাচনে ভোটে কারচুপির অভিযোগ এনে বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোনো ভোটে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এমন ঘোষণা দিয়ে স্থানীয় নির্বাচনে এক ধরনের কৌশলী ভূমিকা নিয়েছে তারা।

তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও বিএনপির তৃণমূলের ৯৬ জন প্রার্থী ভোটে জিতেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। এই ভোটের আগে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম স্পষ্টতই জানান, তারা কাউকে মার্কা দেবেন না, তবে কেউ প্রার্থী হলে বাধাও দেবেন না।

গত ৬ ডিসেম্বর আইভী মনোনয়ন ফরম তোলার দিন ‘ইউপি নির্বাচন থেকে বার্তা পেয়ে’ ২০১৬ সালের প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামালও নেন মনোনয়ন ফরম।

সাখায়াত হোসেন খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দেশের মানুষের ভোটাধিকার নেই, এ কারণে জাতীয়তাবাদী দল স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি। তবে আমি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলাম, কারণ দলের নির্দেশনা আছে। দল নির্বাচনে না গেলেও কোনো নেতা চাইলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।’

মনোনয়ন ফরম নিয়ে এ টি এম কামাল বলেন, ‘আমাদের দল নির্বাচনে না যাওয়ার একটা ঘোষণা দিয়েছে, তবে দলের মহাসচিব বলেছেন; কেউ যদি স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চান, তাহলে দলের আপত্তি নেই। এ কারণে দলের নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে রোববার মনোয়নপত্র নিয়েছি।’

এরপর মনোনয়ন ফরম নেন আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে গিয়ে ২০০১ সালে সংসদ সদস্য হওয়া গিয়াস উদ্দিন। রোববার দুপুরে জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে এই মনোনয়নপত্র নেন তার সমর্থকরা।

তৈমূর আলম খন্দকার ভোটে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করে বলেন, ২০১১ সালের নির্বাচনে শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়ান বলে ২০১৬ সালে প্রার্থী হননি। এবার তিনি ‘জনগণের প্রার্থী হিসেবে’ নির্বাচন করবেন।

তৈমূর আলম নিউজবাংলাকে জানান, ‘দল নির্বাচনে যাবে না আমাকে তা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে। আমি আগামী কাল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করব। দল থেকে আরও যারা মনোয়নয়ন কিনেছে তাদের বিষয় আমার দেখার নয়। জনগণ যদি মনে করে যে, নারায়ণগঞ্জে আমার ভূমিকা আছে, তাহলে তারা আমাকে ভোট দিবে। আমি জনগণের প্রার্থী হিসেবে মানুষের অধিকার আদায়ে নির্বাচন করব।’

রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত মেয়র পদে ৯ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এ ছাড়া ২৭টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৫৯ প্রার্থী ফরম কিনেছেন। তাদের মধ্যে ৩৩ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিল প্রার্থী।

আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। যাচাই-বাছাই শেষে বৈধ প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা ছাড়া মেয়র পদে মনোনয়নপত্র তুলেছেন ২০ দলীয় জোটের শরিক বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব রাশেদ ফেরদৌস, ইসলামী আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের জসীম উদ্দিন, খেলাফত মজলিসের এবিএম সিরাজুল মামুন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম।

নির্বাচন কমিশন আগামী ১৬ জানুয়ারি ভোটের তারিখ ধরে তফসিল ঘোষণা করেছে। এবার ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৫৭ জন। তাদের মধ্যে ২ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৯ পুরুষ ও ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫১৭ নারী ভোটার। এ ছাড়া চারজন ট্রান্সজেন্ডার ভোটার রয়েছে এ সিটিতে।

এ বিভাগের আরো খবর