বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লেবার রুমের সামনে ইউপির তথ্য সেবাকেন্দ্র

  •    
  • ১২ ডিসেম্বর, ২০২১ ২১:৫০

ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল মোস্তফা তালুকদার বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় জায়গার অভাবে অস্থায়ীভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনে তথ্যসেবা চালু রয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি শিগগিরই জায়গা সমস্যা সমাধান করে তথ্য সেবাকেন্দ্রটি সরিয়ে নেয়ার।’

ভবনটি চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র। নারী রোগী, গর্ভবতী ও নতুন মায়েদের আনাগোনাই এখানে বেশি।

তবে ২০১০ সাল থেকে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে বিব্রত হচ্ছেন নারীরা। কারণ সে বছর থেকে এখন পর্যন্ত ভবনের নিচতলা ব্যবহার হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে।

উপজেলার পয়ালী গ্রামে অবস্থিত দোতলা ভবনের ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নিচতলায় আটটি কক্ষের দুটিতে চলছে পরিষদের দাপ্তরিক কাজ। বাকি ছয়টি কক্ষের একটি কৈশোরবান্ধব কর্নার, একটি অস্ত্রোপচার কক্ষ (ওটি), একটি স্টোররুম ও একটি প্রসব-পরবর্তী কক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া একটি কক্ষে স্বাস্থ্যকর্মী ও আরেকটিতে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শিকা বসেন।

নির্ধারিত ও স্থায়ী কার্যালয় না থাকায় ইউনিয়ন পরিষদ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এই ভবন ব্যবহার করছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। তবে এতে গ্রামের সেবা নিতে আসা নারীরা বিব্রত হচ্ছেন।

স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা নিতে আসা পয়ালী গ্রামের আছমা আক্তার বলেন, ‘আমরা সেবা নিতে এসে মন খুলে কথা বলতে পারি না। পাশের রুমেই অনেক মানুষ আনাগোনা করে। বিশেষ করে মানুষ বেশি থাকলে অনেক সময় পুরুষদের গায়ের সঙ্গে ধাক্কা লেগে যায় অনেক নারীর।’

আরেক রোগী রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘প্রসব যন্ত্রণায় অনেক সময় মায়েরা চিৎকার দিলে পাশের রুমে থাকা মানুষজন সেটি শুনতে পায়। এতে ওই মা ও পাশে যে থাকেন দুইজনব বিব্রত হন। আমরা চাই এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেন শুধু স্বাস্থ্যসেবাই দেয়া হয়। তথ্য সেবাকেন্দ্রটি যেন অন্য কোথাও সরিয়ে নেয়া হয়।’

নারায়ণপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দেয়া তথ্যমতে, এখানে প্রতি মাসে গড়ে ১৫-১৬টি এবং বছরে গড়ে ১৮০-১৯০টি স্বাভাবিক প্রসব হয়। মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর, মালাপাড়া, গাবুয়া, চিরায়ু, মণিগাঁও, হরিদাসপাড়া, কালিকাপুর, বদরপুর, নাটশাল, দৌলতপুরসহ আশপাশের ৪০ গ্রামের নারীরা এখানে প্রসবসেবা নিচ্ছেন। ২০১৩ সাল থেকে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত এ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১ হাজার ১৭০টি স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে।

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকা খালেদা আক্তার বলেন, ‘কেন্দ্রের ওটি (লেবার) রুমের উল্টোপাশের রুমটি হলো ইউনিয়নের তথ্য সেবাকেন্দ্র। অনেক সময় বাইরের মানুষ শুনতে পাওয়ার ভয়ে প্রসূতি মায়েরা লজ্জায় ঠিকমতো কথাও বলতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘নিরাপদ মাতৃত্বের স্বার্থে অচিরেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে তথ্যসেবা কার্যক্রম বন্ধ হওয়া জরুরি। নারীদের বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে রক্ষার জন্য সেবাকেন্দ্রটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া দরকার।’

তথ্য সেবাকেন্দ্রে সেবা নিতে আসা নারায়ণপুর ইউনিয়নের মনির হোসেন বলেন, ‘এভাবে পাশাপাশি দুটি রুমে দুই ধরনের সেবা কার্যক্রম চলায় আমরাও সমস্যার মধ্যে পড়ি। আমাদের মা-বোনরা তাদের স্বাস্থ্যসেবা নিতে এসে মন খুলে কথা বলতে পারে না।’

এ ব্যাপারে নারায়ণপুর ইউপির চেয়ারম্যান জহিরুল মোস্তফা তালুকদার বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় জায়গার অভাবে অস্থায়ীভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবনে তথ্যসেবা চালু রয়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি শিগগিরই জায়গা সমস্যা সমাধান করে তথ্য সেবাকেন্দ্রটি সরিয়ে নেয়ার।’

মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম কাওসার বলেন, ‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তথ্যসেবার যে কার্যক্রম হচ্ছে, সেটিও সরকারি কার্যক্রম। তবে এটি যেহেতু প্রসূতি মায়ের স্বাস্থ্যসেবায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে, তাই আমরা তা সরিয়ে নিতে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা নারীরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে চিকিৎসাসেবা নিতে পারেন এবং কোনো ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর