বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মুরাদকে কেন ঢুকতে দিল না কানাডা

  •    
  • ১২ ডিসেম্বর, ২০২১ ২১:১০

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র ডা. মুরাদকে কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঢুকতে না দেয়ার পেছনে তিনটি কারণ পেয়েছে। আর কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন ও সে দেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে দুটি কারণ জানা গেছে।

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ হারানো ডা. মুরাদ হাসান একজন সংসদ সদস্য এবং লাল পাসপোর্টধারী হওয়া সত্ত্বেও কেন কানাডা ও সংযুক্ত আমিরাত তাকে ফিরিয়ে দিল, তা নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কোনো মহল এ বিষয়ে মুখ খুলছে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এখন তুরস্ক সফরে রয়েছেন। ভারত সফররত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম যদিও বিকেলে বেনাপোল দিয়ে দেশে ঢুকেছেন, তবে তাকে প্রশ্ন করার সুযোগ পাননি সাংবাদিকরা। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন রোববার বিকেলে বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমির এক অনুষ্ঠানে যোগ দিলেও সাংবাদিকদের এড়িয়ে তিনি দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সুইডেন, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ডের টিকা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে থাকার কথা থাকলেও তিনি সেখানে আসেননি।

তবে সেগুনবাগিচার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কক্ষে এমপি মুরাদের ফিরে আসা নিয়ে সারা দিনই আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র মুরাদকে কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ঢুকতে না দেয়ার পেছনে তিনটি কারণ পেয়েছে। তবে কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন ও সে দেশে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে দুটি কারণ জেনেছে তারা।

একটি সূত্র জানিয়েছে, কোভিড প্রোটোকল না মানার অভিযোগ আনা হয়েছে মুরাদের বিরুদ্ধে। তবে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও লাল পাসপোর্টের অধিকারী হওয়ায় তাকে আটক হতে হয়নি। অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, লাল পাসপোর্টধারী হলেও ভিআইপি ও ডিপ্লোম্যাটিক কোনো প্রোটকল মানেননি মুরাদ। ফলে যথাযথ কাগজপত্র ছিল না তার কাছে। এটা কানাডিয়ান ইমিগ্রেশনকে বিব্রত করেছে।

তবে এই দুই কারণের বাইরে আরেকটি কারণের কথা বলছে মন্ত্রণালয় সূত্র। মুরাদকে কানাডায় ঢুকতে না দেয়ার পেছনে তারা কানাডার অন্যতম মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করছে। ভূরাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে বাংলাদেশ সরকারকে চাপে ফেলার ইঙ্গিত হিসেবে তারা দেখছে কানাডার এই ধরনের সিদ্ধান্তকে।

মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ এখন উল্লেখযোগ্য অস্ত্র আমদানিকারক দেশ। কিন্তু বাংলাদেশ আমেরিকা বা কানাডার কাছ থেকে কোনো অস্ত্র কিনছে না। বাংলাদেশ যুদ্ধাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কিনছে বা কেনার আগ্রহ দেখাচ্ছে তুরস্ক, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও ইতালির কাছ থেকে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে চাপে ফেলার জন্য নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করে থাকতে পারে। এর একটি হতে পারে কানাডাকে দিয়ে মুরাদকে ফেরত পাঠানো, অন্যটা মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে বর্তমান পুলিশপ্রধানসহ (সাবেক র‌্যাব মহাপরিচালক) সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি।

অন্যদিকে কানাডা থেকে প্রকাশিত বাংলা সংবাদমাধ্যম নতুন দেশ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডা. মুরাদ শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা দেড়টায় টরন্টোর পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে তাকে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় তার কাছে করোনার সময়ে ভ্রমণসংক্রান্ত যথাযথ কাগজপত্র না থাকায় তাকে ঢুকতে দেয়া হবে না বলে জানানো হয়।

এ ছাড়া ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ মুরাদ হাসানকে জানায়, তার সে দেশে ঢোকা নিয়ে অনেক কানাডিয়ান নাগরিক আপত্তি তুলেছেন।

তবে অন্য একটি সূত্র বলছে, কী কারণে কানাডায় এসেছেন, জানতে চাওয়া হলে এর পক্ষে কোনো কারণ দেখাতে ব্যর্থ হন মুরাদ। অন্যদিকে তার সরকারি ও ব্যক্তিগত পাসপোর্ট জটিলতার বিষয়েও কানাডা ইমিগ্রেশন জানতে চাইলে কোনো গ্রহণযোগ্য উত্তর দিতে পারেননি তিনি। ফলে তাকে পিয়ারসন এয়ারপোর্ট থেকেই দুবাইয়ের ফ্লাইটে তুলে দেয়া হয়।

এদিকে কানাডায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার খলিলুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরাও নানা অভিযোগের কথা শুনেছি। কিন্তু কানাডার পররাষ্ট্র বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার তথা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে ডা. মুরাদের বিষয়ে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি। তিনি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। কানাডার ইমিগ্রেশনও আমাদের কিছু জানায়নি। তবে গণমাধ্যমে খবর এসেছে, তাকে কানাডায় প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।’

প্রশ্ন উঠেছে, ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট ও কোভিড প্রোটোকল না মেনে ডা. মুরাদ কীভাবে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে কানাডায় গেলেন?

সাংবাদিকরা এ প্রশ্ন করেন বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলি ও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এ এইচ এম তৌহিদ-উল আহসানকে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তৌহিদ-উল আহসান বলেন, ‘বিমানবন্দর দিয়ে যে যাত্রীই বাইরের দেশে যান, তাদের বহির্গমনে স্বাস্থ্য সনদ চেক করা, ভ্যাকসিনেশন সার্টিফিকেট চেক করার দায়িত্ব সিভিল এভিয়েশনের। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নয়। আমরা ইমিগ্রেশন করি, যাত্রীদের সেবা দিই। ইমিগ্রেশন শাখা ইমিগ্রেশন করবে, স্বাস্থ্যের কাজ স্বাস্থ্য করবে। মুরাদসংক্রান্ত তথ্য জানতে হলে আপনাদের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন করলে তারা ভালো উত্তর দিতে পারবে।’

এ বিভাগের আরো খবর