বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘এবার আগন মাস পার হয়া গেইল কিন্তু জার পড়িল না’

  •    
  • ১২ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৬:০৪

বুলবুলি বেগম বলেন, ‘জার যত কম পড়বে ততই হামার মতো গরিব মানুষের জন্য ভালো। নদী এলাকায় হামার বাড়ি। হিম বাতাসের কারণে থাকপার পাই না। আইত (রাত) করি একনা ঠান্ডা পড়লেও দিনের আলোত কমি যায়।’

‘বাহে, মোর ৬০ বছর বয়সেও এমন কম শীত চোখে পড়ে নাই। ভোরবেলা একটু করে শীত পড়লেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গরম পড়ে। হামার এত্তি (এখানে) কাতি (কার্তিক) মাস থাকি ফাগুন মাস পর্যন্ত জার (শীত) থাকে। এবার আগন (অগ্রহায়ণ) মাস পার হয়া গেইল কিন্তু জার পড়িল না।’

বলছিলেন কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার দিনমজুর মজিবর রহমান।

অন্যান্য বছর এই সময়ে কুড়িগ্রামে তীব্র শীত থাকলেও এবার এখনও তেমন তীব্রতা দেখা যায়নি। ভোরের দিকে বেশ কুয়াশা থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এখনও শীত পড়েনি।

কুড়িগ্রাম কৃষি ও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘১২ ডিসেম্বর কুড়িগ্রামে সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ৯ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যা এ বছরের সর্বনিম্ন। ২০ ডিসেম্বরের পর মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

‘গত বছর এই দিনে তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা বেশি থাকলেও সেবার ঠান্ডার তীব্রতা বেশি ছিল। সূর্যের দেখা মিলেছে অনেক বেলায়, তাপ ছিল কম। সেই সঙ্গে উত্তরের হিমেল বাতাস। এ বছর সকাল সাড়ে ৬টার পর থেকেই রোদ থাকছে। তেমন বাতাসও নেই।’

সুবল চন্দ্র সরকার জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অতি খরা, অতি বর্ষণ ও শীত আসতে দেরি হচ্ছে।

সদরের ভ্যানচালক মকবুল মিয়া বলেন, ‘এ বছর দিনের বেলা এলাও (এখনও) শীত নাই। রাতে শুধু ঠাণ্ডা।’

যাত্রাপুর ইউনিয়নের মোল্লার চরের বুলবুলি বেগম বলেন, ‘জার যত কম পড়বে ততই হামার মতো গরিব মানুষের জন্য ভালো। নদী এলাকায় হামার বাড়ি। হিম বাতাসের কারণে থাকপার পাই না। আইত (রাত) করি একনা ঠাণ্ডা পড়লেও দিনের আলোত কমি যায়।’

দেশে এখন আমন ধান মাড়াই ও সংগ্রহের কাজ চলছে। তাই ভোরের দিকে ঠাণ্ডা থাকায় ভোগান্তি বাড়তে শুরু করেছে কৃষকদের।

যাত্রাপুর ইউনিয়নের বলতিপাড়ার কৃষক মমিন মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শহরের চেয়ে গ্রাম আর চরের দিকে ঠাণ্ডা বেশি। হামাক সাত সকালে উঠি মাঠে কাজত যাওয়া নাগে। জারের কারণে ধান কাটতে, মাড়াই করতে হাত-পা বরফ হয়ে যায়।’

শীত কম থাকায় এখনও শীতজনিত রোগের প্রকোপ তেমন বাড়েনি বলে জানান কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক শহিদুল্লাহ লিংকন।

তিনি বলেন, ‘এখনও শীতজনিত রোগ যেমন নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, জ্বর, হাঁপানি রোগীর সংখ্যা বাড়েনি। বছরের অন্য সময়ে যেমন রোগীর চাপ থাকে তেমনই আছে।’

এ বিভাগের আরো খবর