বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লাল শাপলার বুকে ডানা মেলে নেমে আসে তারা

  •    
  • ১২ ডিসেম্বর, ২০২১ ০৮:৪৪

অন্যান্য বছরের মতো এবারও নভেম্বরের শুরুতেই ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করে এসব পাখি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর লেক, ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার লেক, সুইমিংপুল সংলগ্ন লেক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের পাশের লেকে এরই মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পাখি এসেছে।

কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের সকালে লেকে ফুটে থাকা লাল শাপলা। তার মধ্যে ডানা মেলে ঝাঁকে ঝাঁকে নেমে আসে তারা। এক ঝাঁক নামে তো আরেক ঝাঁক ওড়ে।

বলছিলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পরিযায়ী পাখিদের কথা। নৈসর্গিক সৌন্দর্য, শিক্ষার্থীদের পদচারণে আর পরিযায়ী পাখিদের কোলাহলে এখন একাকার জাবি ক্যাম্পাস।

সকালে সবার ঘুম ভাঙে পাখির কিচিরমিচির শব্দে। সারা দিন কিছুটা শান্ত থাকলেও বিকেলে শুরু হয় আবার তাদের ডাকাডাকি, ওড়াউড়ি। পরবর্তী দিনের অপেক্ষায় সন্ধ্যায় থামে সেই যজ্ঞ।

ঋতুর পালাক্রমে হেমন্ত শেষে শীত এলেই জাবি ক্যাম্পাসে আগমন ঘটে নতুন এ অতিথির। সুদূর সাইবেরিয়া, নেপাল ও মঙ্গোলিয়া থেকে আসে তারা।

অন্যান্য বছরের মতো এবারও নভেম্বরের শুরুতেই ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করে এসব পাখি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর লেক, ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার লেক, সুইমিংপুল সংলগ্ন লেক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের পাশের লেকে এরই মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পাখি এসেছে।

পরিযায়ী এসব পাখি দেখতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি আর বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে খ্যাত সবুজ ক্যাম্পাসে তাই ভিড় করছেন অনেকে। রাজধানী ঢাকা থেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে ঘুরতে যাচ্ছেন অনেকে। ভিড় করছেন পাখিপ্রেমীরাও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে জানা যায়, ১৯৮৬ সাল থেকে জাবির লেকগুলোতে অতিথি পাখি আসছে। একসময় দেশি-বিদেশি মিলে ১৯৫ প্রজাতির পাখির দেখা মিলত।

তাদের মধ্যে ছিল পিনটেইল, কোম্বডাক, পচার্ড, চিতা টুপি, লেসার হুইসেল, নাকতা, মানিকজোড়, গার্গিনি, ছোট সরালি, বড় সরালি, বামুনিয়া, হাঁস পাখি, মুরহেন, খঞ্জনা, নর্দান, লালগুড়গুটি, জলপিপি, কলাই, শামুকভাঙা, ভিনদেশি বক। তবে এখন শুধু সাত থেকে আট প্রজাতির পাখির দেখা মেলে।

বিভাগ থেকে আরও জানা যায়, মূলত নভেম্বর থেকেই শীতপ্রধান দেশ সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, চীন, নেপাল থেকে দক্ষিণ এশিয়ার নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এ পাখিরা আসে। ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে তারা ফিরে যেতে শুরু করে নিজ বাসভূমিতে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখা জানিয়েছে, অতিথি পাখির খাদ্যের জোগান, তাদের বিচরণ ও নিরাপদ আবাসস্থল নিশ্চিতে প্রতিবারের মতো ক্যাম্পাসের পাঁচটি লেক লিজমুক্ত রাখা হয়েছে। এই পাঁচটি লেকের পাড় বাঁধানোর পাশাপাশি দর্শনার্থীদের নির্দিষ্ট দূরত্বে রাখার জন্য কাঁটাতারের বেড়া দেয়া হয়েছে।

কর্মকর্তারা জানান, দিন দিন পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এ জন্য নেয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা। দর্শনার্থীরা যাতে পাখিদের বিরক্ত না করে সে জন্য সচেতনতামূলক বিভিন্ন পোস্টার লাগানো হয়েছে।

প্রতিবছর লেকগুলো পরিযায়ী পাখির বিচরণের জন্য প্রস্তুত, রক্ষণাবেক্ষণ ও খাবারের ব্যবস্থা করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অন্তত ১৫ লাখ টাকা ব্যয় হয় বলেও জানান তারা।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিযায়ী পাখির আগমন উপলক্ষে মানুষকে পাখি বিষয়ে সচেতন করতে প্রায় দুই লাখ টাকা ব্যয়ে প্রতিবছর পাখি মেলার আয়োজন করা হয়।

এ বিভাগের আরো খবর