দেশের গণতন্ত্রিক পরিস্থিতি নিয়ে চীন যে মনোভাব প্রকাশ করেছে তাতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে বিএনপি।
শনিবার রাতে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বিএনপির এমন অবস্থান জানানো হয়।
এক বিবৃতিতে রিজভী জানান, ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে ভিডিও বক্তব্য দিয়েছেন তা বিএনপির নজরে এসেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের বর্তমান অবৈধ সরকার সম্পর্কে তার মূল্যায়ন ও মন্তব্যে গণতন্ত্রকামী দেশবাসীর মতো আমরাও ক্ষুব্ধ এবং বিস্মিত।
আরও বলা হয়েছে, মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের প্রাণ আর ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের মাতৃভূমির স্বাধীনতার মূল চেতনা হল গণতন্ত্র, সাম্য, মানবাধিকার ও সামাজিক ন্যায়বিচার। জনগণের ম্যান্ডেটবিহীন ক্ষমতাসীন গণবিরোধী এই অবৈধ সরকার গোটা দেশবাসীকে এই সকল অধিকারসমূহ থেকে যখন বঞ্চিত করছে, দেশের জনগণ যখন তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারে সোচ্চার, বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক মহল ও মানবাধিকার সংগঠন সমূহ যখন লাগাতারভাবে এই সরকারকে হুঁশিয়ারী দিয়ে চলছে, ঠিক তখনই গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের বর্তমান ফ্যাসিবীদী সরকারের পক্ষে দেয়া এই বাস্তবতা বিবর্জিত বক্তব্য দেশের মানুষকে গভীরভাবে ক্ষুব্ধ ও আহত করেছে।
বলা হয়, চীন তার নিজ দেশে কি ব্যবস্থা বহাল রাখবে তা একান্তই তার আভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ ঐতিহ্যগতভাবে অবাধ নির্বাচন ও প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার চর্চার মাধ্যমে তাদের রাষ্ট্রীয় মালিকানা চর্চা করেছে ও করবে। কেননা, প্রত্যক্ষ ভোটাধিকার প্রয়োগই হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রাণ এবং জনগণের ক্ষমতা চর্চার একমাত্র মাধ্যম। যার মাধ্যমেই রাষ্ট্র জনগণের কাছে জবাবদিহিতায় আবদ্ধ থাকে। এটাই জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গণতন্ত্র চর্চার সার্বজনীন পন্থা।
সবশেষে বলা হয়েছে, তাই গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও দেশবাসীর প্রত্যাশা, অবাধ নির্বাচন, মানবাধিকার তথা গণতন্ত্রের স্বার্থে ও দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের জনগণের বন্ধুত্বের স্বার্থে গণবিরোধী ও গণবিচ্ছিন্ন জবরদস্তিমূলক এই অবৈধ সরকার নয়, দেশের প্রকৃত মালিক জনগণের পাশেই তারা সবসময় দাঁড়াবেন।
এর আগে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আয়োজিত গণতন্ত্র শীর্ষ সম্মেলন নিয়েও মন্তব্য করেছিলেন। তার মতে, বাংলাদেশসহ বিশ্বের অর্ধেক জনগোষ্ঠী সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশের তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। গণতন্ত্রকে সংজ্ঞায়িত করার যোগ্যতা যুক্তরাষ্ট্র রাখে কি না সে বিষয়েও প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলেন তিনি।