মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে বাংলাদেশের কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে নিজের মানবাধিকার পরিস্থিতির দিকে তাকানোর পরামর্শ দিয়েছে সরকারের শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।
শনিবার বামপন্থি এ দলটির পলিটব্যুরো থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এমন আহ্বান জানানো হয়েছে।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের সাত বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানিয়েছে। দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট আলাদাভাবে এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা তালিকায় রয়েছেন র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও পুলিশের বর্তমান মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, র্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মুস্তফা সরওয়ার, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও আনোয়ার লতিফ খান এবং বাহিনীটির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ।
ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কেবল নিজ দেশেই নয়, পৃথিবীর দেশে দেশে হত্যা, গুম, অপহরণসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত। একক বিশ্বব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে তাদের হারানো জায়গা ফিরে পেতে দেশটি এখন ‘বিশ্ব গণতন্ত্র’কে শক্তিশালী করার কথা বলছে। তারা সম্মেলন করছে, তাও যে কত মেকি বিশ্বের গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহ সেটি ভালোভাবেই জানে।
বিবৃতিতে ওয়ার্কার্স পার্টি দাবি করেছে, দলটি জিয়া শাসনে ২ অক্টোবরের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের অজুহাতে জেলখানা ও সেনানিবাসে ৭০০ সেনাসদস্য হত্যা, খালেদা জিয়ার শাসনে ‘অপারেশন ক্লিন হার্টের’ নামে বিচারবহির্ভূতভাবে প্রায় এক হাজার মানুষ হত্যা ও তার বিচাররুদ্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশে জারি, বর্তমানেও একইভাবে র্যাব ও পুলিশ কর্তৃক বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম ও অপরহণের বিরোধিতায় সোচ্চার। তারা এসব বিচারবহির্ভূত হত্যা, অপহরণ ও গুম সম্পর্কে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠনের দাবিও জানিয়েছে। তবে ওয়ার্কার্স পার্টি এসব ঘটনায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরোধী।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক চেতনাবোধ থেকে মানবাধিকারসহ গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রশ্নকে নিজেরাই অতীতে মীমাংসা করেছে এবং এখনও করতে সক্ষম।
ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে গুম, খুন, অপহরণসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনকে পাল্টাপাল্টি বিষয়ে পরিণত না করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।