ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ১৭ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কারের বিষয়টি শুক্রবার বিকেলে নিশ্চিত করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার।
তবে বহিষ্কারের তালিকায় থাকা তিন বিদ্রোহী প্রার্থীকে নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কারণ ওই তিনজন দলের কোনো কমিটির পদে নেই। তারা শুধু দলের প্রাথমিক সদস্য। স্থানীয় অনেকে বলছেন, প্রাথমিক সদস্যকে কীভাবে বহিষ্কার করা যায়?
ওই তিনজন হলেন বুধন্তি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন খান, বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের জসিম উদ্দিন চৌধুরী ও হরষপুর ইউনিয়নের মো. শাহজাহান।
বহিষ্কারাদেশে বলা হয়েছে, ওই তিনজন উপজেলা আওয়ামী লীগের কোনো পদে না থাকলেও সমর্থক হিসেবে দলের হয়ে কাজ করছেন। ইউপি নির্বাচনে দলের বিরোধিতা করে প্রার্থী হওয়ায় তাদের বহিষ্কার করা হলো।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন জানান, দলের প্রাথমিক সদস্যরা যদি নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হন, তাহলে গঠনতন্ত্রের ৪৭-এর ১১ ধারা অনুযায়ী তাদের বহিষ্কার করা যাবে। বিজয়নগর উপজেলায় ওই তিন বিদ্রোহী দলের প্রাথমিক সদস্য হওয়ায় তাদের সেই ধারা অনুযায়ী বহিষ্কার করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৭ ধারায় প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলার কথা বলা হয়েছে। ৪৭-এর (১১)-তে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কেহ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হইলে দল হইতে সরাসরি বহিষ্কার হইবেন এবং যাহারা দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করিবেন, তাহারা তদন্তসাপেক্ষ মূল দল বা সহযোগী সংগঠন হইতে বহিষ্কৃত হইবেন।’
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়াও জানালেন একই কথা। তিনি বলেন, ‘দলের বিরোধিতা করায় তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে। তার কারণ হচ্ছে, মনোনয়নপত্র নেয়ার আগে তারা অঙ্গীকার করেছিলেন, যদি নৌকা প্রতীক না পান তাহলে স্বেচ্ছায় দলের পক্ষে কাজ করবেন।
‘তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কার্যক্রমে দলের প্রাথমিক সদস্য হিসেবে অংশ নিয়েছেন। সেই হিসেবে ৪৭-এর ১১ ধারা মোতাবেক তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।’
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. শাহজাহান বলেন, ‘আমি গত নির্বাচনেও স্বতন্ত্র হয়ে অংশ নিয়েছি। এবারও তা করতে চেয়েছিলাম। তবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আমাকে সমর্থক উল্লেখ করে কেন বহিষ্কারের সুপারিশ করেছেন জানি না।’
অন্য দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন ও জসিম উদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তারা ধরেননি।