নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার যদুনাথপুর গ্রামের জোড়া শিশু লাবিবা ও লামিসাকে আলাদা করা হবে সোমবার। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই তাদের অস্ত্রোপচার করবেন চিকিৎসকরা।
শনিবার দুপুরে এই অস্ত্রোপচারের ঘোষণা দিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন চিকিৎসকরা। ঢামেক হাসপাতালের সভাকক্ষে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। চিকিৎসরা জানান, সব কিছু ঠিক থাকলে সোমবারই অস্ত্রোপচার হবে দুই বছর আট মাস বয়সী জোড়া শিশু লাবিবা ও লামিসার।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. আশরাফ-উল হক কাজলের নেতৃত্বে সাতটি বিভাগের ৩০-৩৫ জন বিশেষজ্ঞকে নিয়ে জটিল ওই অপারেশন করা হবে।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ডা. আশরাফ-উল হক বলেন, ‘জোড়া লাগা দুই শিশুর হাত-পা-মাথা ঠিক আছে। কোমরের নিচের অংশে জোড়া লেগে আছে। তাদের পায়ুপথ ও মেরুদণ্ড জোড়া রয়েছে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এগুলোকেই আলাদা করা হবে।’
তিনি জানান, জটিল এই অপারেশন পরচিালনা করার জন্য যে যে বিভাগের চিকিৎসক দরকার, তাদের সবাইকে নিয়েই এই অস্ত্রোপচার করা হবে।
তিনি বলেন, ‘অপারেশনটি খুবই ব্যয়বহুল। শিশুটির পরিবারের পক্ষ থেকে তা মেটানো সম্ভব না। তাই আমাদের চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সোশ্যাল ওয়েলফেয়ারের পক্ষ থেকে সব ব্যয় বহন করা হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, শিশুদের বাবা একজন দিনমজুর। তাই তাদের প্রয়োজনীয় সব খরচও দেয়া হচ্ছে।’
জটিল হলেও অপারেশন সফল হওয়ার ব্যপারে আশাবাদী আশরাফ-উল হক। এ জন্য সবার কাছে তিনি দোয়া প্রার্থনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ টিটো মিঞা, শিশু বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল হানিফ (টাবলু), পেডিয়েট্রিক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আইয়ুব আলী সরকার, প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক বিধান সরকার। এ ছাড়া বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপক, বিশেষজ্ঞ সার্জন, হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক আশরাফুল আলমসহ আরও অনেক চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।
লাবিবা ও লামিসার বাবা মো. লাল মিয়া রাজমিস্ত্রির সহকারী। আর মা মনুফা আক্তার গৃহবধূ। ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল তারা জোড়া লাগা অবস্থায় লাবিবা ও লামিসার জন্ম দেন।
জন্মের ৯ দিন পরই লাবিবা ও লামিসাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাদের বাবা-মা। এর পর থেকে চিকিৎসকদের পরামর্শেই দুই শিশুর যত্ন নিতে থাকেন তারা।
গত ২৮ নভেম্বর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে ভর্তি করা হয় লাবিবা ও লামিসাকে। সেই থেকে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানেই আছে তারা।