বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মানবাধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শনিবার দুপুরে মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ‘বিশ্বের নাগরিক, সুশীল সমাজ, জাতিসংঘ কে কী বলল তাতে তার (প্রধানমন্ত্রীর) কিছু যায় আসে না। তার মূল লক্ষ্য, ক্ষমতায় থাকতে হবে। আর ক্ষমতায় টিকে থাকার পথে বাধা মনে করেন খালেদা জিয়াকে। তাই শেখ হাসিনার কাছে খালেদা জিয়ার কোনো মানবাধিকার নেই। তার নাগরিক হিসেবে কোনো অধিকার নেই, চিকিৎসার অধিকার থাকতে নেই।’
খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসা নিশ্চিত এবং জিয়া পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অশ্লীল বক্তব্যের প্রতিবাদে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ড্যাব) এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
রিজভী বলেন, ‘শুক্রবার বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পালিত হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, কারও যেন মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয়। দেশে দেশে প্রত্যেকটি মানুষের মানবাধিকার সংরক্ষণের জন্য জাতিসংঘ দিবসটি পালন করে, মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে।
‘বাংলাদেশ সরকারের কীসের উদ্বুদ্ধ হওয়া? তোরা যে যা বলিস ভাই আমার ক্ষমতার হরিণ চাই। এই যার নীতি, সেই নীতিতে তার একটাই লক্ষ্য, তার বিরুদ্ধে যেন কোনো আওয়াজ না হয়, তার বিরুদ্ধে কেউ যেন কোনো কথা বলতে না পারে, তার পথে কেউ যেন কাঁটা হয়ে না থাকতে পারে।’
তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী আইনি প্রক্রিয়ার কথা বলেন। যার হাতে ক্ষমতা-বন্দুক, সে-ই বলে আইনি প্রক্রিয়ার কথা। যে বিবেকবান গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, সেই চায় নিরপেক্ষ আইনের চর্চা। যিনি সারাটা জীবন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, তিনি অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে পারবেন না- এটা কোনো গণতান্ত্রিক দেশে হতে পারে না।’রিজভী আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে একটি গণতান্ত্রিক সম্মেলন হয়ে গেল। সেই সম্মেলনে বাংলাদেশকে ডাকা হয়নি। এরপর আমরা দেখলাম, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছয়জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধু তারা নয়, তাদের সন্তানদেরও নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেখানে লেখাপড়া করার ক্ষেত্রে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের দুটি মন্ত্রণালয়ও (অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।’
‘যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কোনো সম্পত্তি থাকলে তাও বাজেয়াপ্ত হবে। এর জন্য দায়ী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। আপনার অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য আজকের পুলিশপ্রধান ২০১৪-১৫ সালে বলেছিলেন, তোমাদের হাতে বন্দুক দেয়া হয়েছে, গুলি দেয়া হয়েছে কি পকেটে রাখার জন্য? অর্থাৎ দেশের বিরোধী দলের নেতাদের বুক গুলি করে ঝাঁঝরা করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন এই ব্যক্তি।’
রিজভী বলেন, ‘পৃথিবীর গণতান্ত্রিক দেশগুলো তো আপনাদের মতো চোখ বন্ধ করে নেই। তারা জানে, বাংলাদেশে কী হচ্ছে। তারা জানে, ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সাইফুল ইসলাম হিরু নেই কেন, এটার সঙ্গে জড়িত কারা। একটা কথা মনে রাখা উচিত, অন্ধ হলেই প্রলয় বন্ধ হয়ে যায় না।’
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন-আল রশিদ।
ড্যাবের মহাসচিব ডা. আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভুইয়া, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, কাদের গনি চৌধুরী, আবেদ রাজা, ড্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি ডা. আব্দুস সেলিম, সহসভাপতি ডা. শহীদ হাসান ও ডা. সিরাজ।