প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিএনপি নেতা আলালের বক্তব্য সাত দিনের মধ্যে প্রত্যাহার না করা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘জননেত্রীকে নিয়ে যারা কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছে, তাদের যেখানে পাবে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা প্রতিহত করবে, যাতে ভবিষ্যতে তারা আর এ কাজ না করতে পারে।’
এ সময় বিএনপি নেতাদের ‘অশালীন’ বক্তব্যের সমালোচনা করেন হানিফ। তিনি বলেন, ‘রাজনীতির মধ্যে শালীনতাবোধ থাকা উচিত। বিএনপির মধ্যে কখনও শালীনতা ছিল না। অশুভ পন্থায়, অবৈধ পন্থায় ক্ষমতা দখল করে দল গঠন করার ফলে তাদের মধ্যে রাজনৈতিক শিক্ষাও নেই এবং শালীনতাও তাদের মধ্যে ছিল না।
‘আজকে শুধু আলাল নয়, বিএনপির শীর্ষ নেতা বেগম খালেদা জিয়াও জননেত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তি করতে পিছপা হননি। বিএনপি নেতা তারেক রহমান লন্ডনে বসে কর্মিসভা করে, জাতির পিতার নাম নেয়ার সময় শ্রদ্ধা নিয়ে পুরো নামটা উচ্চারণ করে না। এরা কত বড় অসভ্য, অশিক্ষিত হলে এসব করতে পারে। জননেত্রী শেখ হাসিনা তার মায়ের বয়সী, তার পুরো নামটাও নেয় না। বিএনপি নামক দলটি শালীনতাবিবর্জিত, অসভ্য, কুরুচিপূর্ণ দল, এটা বারবার প্রমাণিত।’
তিনি বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় ডা. মুরাদের কথা আসার পর অ্যাকশন নেয়া হয়েছে। তাকে জেলা কমিটি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে, বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়, আওয়ামী লীগ কখনও অরুচিকর কথাবার্তা, অশালীন বক্তব্য সমর্থন করে না।
‘বিএনপির আলাল যে কুরুচিকর বক্তব্য দিয়েছেন, এ নিয়ে একটি মামলা হয়েছে। মির্জা ফখরুল সেই মামলার নিন্দা করে প্রকারান্তরে তার বক্তব্যের সমর্থন দিয়েছেন। আমরা তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাই। আগামী সাত দিনের মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার না করে জাতির কাছে ক্ষমা না চাইলে আলালের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
হানিফ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। তার চিকিৎসার জন্য বিএনপি নেতারা বিদেশিদের ডেকে নিয়ে কান্না করছেন। ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে তারা মানবতা দেখিয়েছিল, এমন একটা নিদর্শন দেখাতে পারবেন না। ক্ষমতায় এসে বিএনপি আওয়ামী লীগ নিধন শুরু করে। আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়। গণহত্যা চালিয়ে মানবতা দেখিয়েছেন? অজস্র মেয়ে পাশবিকতার শিকার হয়েছে। বিএনপির অত্যাচারে মানুষ ঘরে থাকতে পারেনি। আর এখন চিকিৎসার কথা বলে সকাল-বিকাল কান্না করছেন। প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতি করে গেছেন। এখন মানবতার কান্না করেন। আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘বিরোধী দলে থাকাকালে নেত্রী সিএমএইচে যখন আইভী রহমানকে দেখতে গিয়েছিলেন, তাকে গাড়ি নিয়ে ঢুকতে দেয়া হয়নি। তাকে আট কিলোমিটার হেঁটে যেতে হয়েছে। কত পৈশাচিক আচরণ করেছেন! একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার পর নিষ্ঠুর পৈশাচিক রসিকতা করলেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর বহু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছেন। পেট্রলবোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। লজ্জা হয় না আপনাদের? তখন কোথায় ছিল গণতন্ত্র? এ দেশের জনগণ তথাকথিত গণতন্ত্রকে ধিক্কার জানিয়েছে, ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।’
‘ভবিষ্যতের বাংলাদেশ ও তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে বিবার্তা২৪ডটনেট ও জাগরণ (আইপি) টিভি।
জাগরণ আইপি টিভির প্রধান সম্পাদক এফ এম শাহীনের সঞ্চালনা ও বিবার্তা২৪ডটনেটের সম্পাদক বাণী ইয়াসমিন হাসির সভাপতিত্বে আলোচক ছিলেন যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিব প্রমুখ।