র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাবের বর্তমান ও সাবেক সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে চমক হিসেবে দেখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, সরকার যে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, তার প্রমাণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে সুচিকিৎসার দাবি এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভার আয়োজন করে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)।
ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে একটি খবর বেরিয়েছে র্যাব নিয়ে, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে, তাদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এটি একটি চমক ছিল। এটি হওয়ারই কথা, এটি তাদের পরিণতি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এত দিন ধরে বলে আসছি মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। আমরা বলে আসছি এই সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে, পুলিশকে ব্যবহার করছে, প্রশাসনকে ব্যবহার করে মানুষকে হত্যা করছে। আজ প্রমাণিত হয়েছে। আমরা দেখতে চাই, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কী ব্যবস্থা নিচ্ছে।’
গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের সাত বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানায়। দেশটির পররাষ্ট্র বিভাগ ও রাজস্ব বিভাগ আলাদা আলাদা করে এ নিষেধাজ্ঞা দেয়।
এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ব্যাখ্যা নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বিষয়টিকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নতুন ঢং বলে মনে করেন। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারের ব্যাখ্যার বিষয়ে জানাতে চেয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
জনসভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আরেকজন মুক্তিযোদ্ধা, তিনি শিশু মুক্তিযোদ্ধা। তিনিও তখন মায়ের সঙ্গে কারাগারে ছিলেন।’
গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের কথা বলে বলেই জনগণ বিএনপিকে এখনও ভালোবাসে বলে মনে করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমানের নেতৃত্বে দল সুসংঘটিত হচ্ছে। সুতরাং ওই চিন্তা করে কোনো লাভ নেই। প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে শত শত জিয়াউর রহমান তৈরি হচ্ছে।’
এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরসহ অন্যরা।