ম্যানেজারকে মারপিটের অভিযোগ এনে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বৈকুণ্ঠপুর চা বাগান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এতে বিপাকে পড়েছেন বাগানের প্রায় পাঁচ শতাধিক শ্রমিক।
বৃহস্পতিবার কর্তৃপক্ষ বাগানটিকে বন্ধ ঘোষণা করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়। একই সঙ্গে শ্রমিকদের কাজে না আসতে জানিয়ে দেয়া হয়।
বৈকুণ্ঠপুর চা বাগানের ম্যানেজার সামছুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ’বাগানের শ্রমিকদের বসবাসের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে। কিন্তু শ্রমিক দিলিপ কেউট নিয়ম ভঙ্গ করে বাগানের ভেতর জনবসতির বাইরে পাকা ঘর নির্মাণ করেন। বিষয়টি আমাদের নজরে এলে আমরা তাকে ঘর নির্মাণে বাধা দিই। কিন্তু তিনি আমাদের বাধা শোনেননি।’
তিনি বলেন, ’বাগানের নিয়ম ভঙ্গ করা এবং নির্দেশনা অমান্য করায় আমরা তার শ্রমিক কার্ড বাতিল করি। যে কারণে গত ৭ ডিসেম্বর তিনি (দিলিপ) বাগানের পঞ্চায়েত কমিটিকে নিয়ে উত্তেজিত হয়ে আমাদের ওপর হামলা চালান। শ্রমিকরা আমাকে ও আমার ডেপুটি ম্যানেজার মহিউদ্দিনকে মারপিট করেন এবং বাংলো ভাঙচুর করেন।’
ম্যানেজার সামছুল বলেন, ‘বিষয়টি আমি বাগান মালিককে জানালে তিনি বাগান বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বাগানটিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।’
বৈকুণ্ঠপুর চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি ঘেনু কেউট বলেন, ‘বাগানের নিয়মনীতি মেনেই দিলিপ কেউট ঘর নির্মাণ করেছেন। কিন্তু ঘর নির্মাণ যখন প্রায় শেষ, তখন বাগানের ম্যানেজার তাকে ঘর বানাতে নিষেধ করেন। একপর্যায়ে তিনি (ম্যানেজার) দিলিপ কেউটের শ্রমিক কার্ড বাতিল করে দেন এবং তাকে কাজে নেননি। যে কারণে দিলিপ ও তার পরিবারের সদস্যরা বেকার হয়ে পড়েন।’
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি। কিন্তু ম্যানেজার আমাদের কোনো কথা না শুনেই বাগান বন্ধ করে দেন। এখন বাগানের প্রায় ৫০০ শ্রমিক কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছেন। অনেক শ্রমিকের ঘরে খাবার নেই।’
পঞ্চায়েত কমিটি বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।
বাগানের শ্রমিক ললিতা কেউট বলেন, ‘আমরা দিন আনি দিন খাই। দুদিন ধরে বাগান বন্ধ থাকার কারণে আমাদের খুব অসুবিধা হচ্ছে। ঘরে খাবার নেই। বাচ্চাকাচ্চারে কী খাওয়াব। দ্রুত বাগানটি খুলে দেওয়ার দাবি জানাই।’