বাগেরহাটের মোল্লাহাটে এক গৃহবধূকে প্রকাশ্যে জুতার মালা পরিয়ে লাঠিপেটা করার অভিযোগে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য কাউসার চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ওই নারী শুক্রবার কাউসারসহ ১৪ জনের নামে মোল্লাহাট থানায় মামলা করেছেন। এরপর বিকেলেই উপজেলার চুনখোলা ইউনিয়নের সিংগাতী এলাকা থেকে কাউসারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কাউসার চুনখোলা ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আছাদুজ্জামান মামলা ও গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বিয়েবহির্ভূত সর্ম্পকের অভিযোগ তুলে ওই গৃহবধূকে প্রকাশ্যে জুতার মালা পরিয়ে লাঠিপেটা করা হয়। এ ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হয় ফেসবুকে।
ওই নারীকে লাঞ্ছনা করার কথা স্বীকার করে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাওসার চৌধুরী বলেন, স্বামী বিদেশ থাকার সুযোগে তিনি যে অপরাধ করেছেন, তার জন্য এটি ‘কম শাস্তি’।
লাঞ্ছিত ওই নারী নিউজবাংলাকে জানান, মারধরের পর তার টাকা ও গহনা ছিনিয়ে নেয়া হয়। সামাজিকভাবে তিনি হেয় হয়েছেন।
এ ঘটনা উপজেলার চুনখোলা ইউনিয়নের সিংগাতী গ্রামের।
ইউপি সদস্য কাওসার চৌধুরীসহ গ্রামের কয়েকজন লোক অভিযোগ করেন, বিভিন্ন লোকের সঙ্গে ওই নারীর বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল।
ইউপি সদস্য বলেন, ‘এগুলো আমাদের কাছে খারাপ লাগে। সোমবার রাতে নিজের মেয়ের শ্বশুরের সঙ্গে ওই নারীকে এক ঘরে পেয়ে তাদের ধরা হয়। এরপর তার বিচার করা হয়।
‘কেবল জুতার মালা গলায় দিয়ে ও কঞ্চির লাঠি দিয়ে লাঞ্ছিত করছি, তার বিচার আরও কঠিন হওয়া উচিত ছিল।’
ওই নারী বলেন, ‘আমার বাড়ির আশপাশের লোকজন আমাকে ধরে আমার সিঁড়ির কাছে নিয়ে গলায় চেইন ছিল এক ভরি ওজনের, আট আনা ওজনের কানের দুল ও ৯৫ হাজার টাকা দামের একটি মোবাইল নিয়ে গেছে। কাওসার মেম্বার ও জানিক ছিল, এরা আমারে জুতার মালা দেছে ও কঞ্চি দিয়ে বাইড়াইছে।
‘আমি এর বিচার প্রশাসনের কাছে চাই। আর এই যে ভিডিও সব জায়গা ছড়াইছে, আমার মানসম্মান যা যাবার তা তো গেইছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এ খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনিন্দ্য মণ্ডল ও মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রুনীয়া আক্তার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।