করোনায় এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় মৃত্যুহীন দিনের পর ২৪ ঘণ্টায় আবার একজনের মৃত্যু হলো। সেই সঙ্গে কিছুটা বেড়েছে শনাক্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন আরও ২৬৯ জন। আগের ২৪ ঘণ্টায় সংখ্যাটি ছিল ২৬২।
শুক্রবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে জানানো হয়, যিনি মারা গেছেন, তিনি একজন নারী। বয়স ৮০ বছরের বেশি। বাড়ি চট্টগ্রামে।
আগের দিনও ২৪ ঘণ্টায় কারও মৃত্যু হয়নি, যা গত দেড় বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার ঘটে। এর আগে মৃত্যুহীন দিন দেশ দেখে গত ২০ নভেম্বর।
দেশে এ নিয়ে করোনা শনাক্ত হয়েছে মোট ১৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮১৯ জনের দেহে। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ১৭ জনের।
গত এক দিনে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ২৪৯ জন। এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৪৩ হাজার ৭৪০ জন। সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
দ্বিতীয় ঢেউ সামলে দেশে করোনা পরিস্থিতি দীর্ঘদিন ধরেই নিয়ন্ত্রণে আছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহ নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে সে দেশের করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসছে বলে ধরা হয়।
সে অনুযায়ী বাংলাদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ইতিমধ্যে নিয়ন্ত্রণে আসে গত অক্টোবরেই। সরকারের লক্ষ্য এই হার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা। ইতিমধ্যে চার জেলায় করোনা সংক্রমণ শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর ক্রমেই করোনা বাড়তে বাড়তে জুন-জুলাইয়ে ওঠে সর্বোচ্চ পর্যায়ে। শীতে আরও বাড়বে, এমন আশঙ্কা থাকলেও গত বছরের ডিসেম্বর থেকে সংক্রমণ ক্রমেই কমতে থাকে।
করোনা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে, এমন একটি ধারণা যখন গেড়ে বসে, তখন মার্চের শেষ থেকে সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকে। এপ্রিলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিশ্চিত হয়ে যায়। এই ঢেউয়ে মৃত্যু যেমন বেশি হয়েছে, তেমনি সংক্রমণও বাড়ে অনেক বেশি।
প্রথম ঢেউয়ে শুরুতে করোনাভাইরাসের ইতালীয় ধরন, পরে যুক্তরাষ্ট্রের ও সাউথ আফ্রিকার ধরন ছড়ায়। তবে এগুলোর চেয়ে বেশি প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে ভারতীয় ধরন। সে সময় ভারতের সঙ্গে স্থল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু সারা দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো যায়নি।
দিনে ২০০ জনেরও বেশি মৃত্যু হয় এই দ্বিতীয় ধরনে। একপর্যায়ে এপ্রিলে লকডাউন ও জুলাইয়ে শাটডাউন নামে পরিচিতি পাওয়া বিধিনিষেধ দেয়া হয়। পরে আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকে বিধিনিষেধ শিথিল হতে শুরু করে। কাগজে-কলমে এখনও কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে, তবে বাস্তবে কিছুই নেই বলা যায়। মাস্ক পরাতেও মানুষের অনীহার বিষয়টি আবার স্পষ্ট হয়েছে। টিকার জন্য নিবন্ধন করলেও টিকা নিতে আসা মানুষের সংখ্যাও কমছে কেন্দ্রগুলোয়।