বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

৬ বছরেই শহররক্ষা বাঁধে ধস

  •    
  • ১০ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৭:১৩

নগরীর স্পিডবোট ঘাটসংলগ্ন বাঁধের পাশে পিঠা বিক্রি করেন মনিরুন্নাহার। তিনি বলেন, ‘আমাগো এই সাইডের বাঁধ ভাঙ্গা বছর তিনেক তো হইবেই। আমরা যে রাস্তার উপর দিয়া হাঁটতাম, হেডাও ভাইঙ্গা গেছে বাঁধ ডাইব্বা যাওনে। এয়া সংস্কারও হয় না, কেউ দেখতেও আয় না।’

নির্মাণের ছয় বছরেই একাধিক স্থানে ধসে গেছে বরিশালের শহররক্ষা বাঁধ। দীর্ঘদিন ধরে এমন অবস্থা থাকলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি বরিশাল সিটি করপোরেশন। স্থানীয়রা বলছে, এতে ঝুঁকিতে আছে বাঁধসংলগ্ন এলাকা।

সরেজমিন বৃহস্পতিবার সকালে দেখা গেছে বাঁধে বড় ধরনের ধস আছে সাতটি স্থানে। নগরীর ৩০ গোডাউন বধ্যভূমিসংলগ্ন একটি, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের পেছনের গেটসংলগ্ন একটি এবং মেঘনা তেলের ডিপোসংলগ্ন স্থানে একটি ধস আছে।

পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা পার্কের মধ্যে ও আশপাশে আরও চারটি বড় ধস দেখা গেছে, দেবে গেছে বাঁধের সড়কও।

বাঁধের পাশেই চায়ের দোকান মো. জুলফিকারের। তিনি বলেন, ‘এপিবিএনের সামনে আর আমার দোকানের সামনে অনেক দিন ধইরাই দেখছি যে বাঁধ ভাইঙ্গা গেছে, মানে ডাইব্বা গেছে। আস্তে আস্তে দেখতেছি যত দিন যায়, তত বড় হইতেছে ভাঙ্গা জায়গা। এইটা ঠিক করা দরকার, নাইলে তো যে অবস্থা কয়দিন পর রাস্তাই ভাইঙ্গা যাইবে।’

কীর্তনখোলা নদীতীরে ঘুরতে আসা সেন্টু গাঙ্গুলী বলেন, ‘সপ্তাহে দু-একদিন ঘুরতে আসা হয় এখানে। এত সুন্দর নদীর পাড়ে বাঁধ ধসটা ঝুঁকির। যারা এটার দায়িত্বে আছে, তারা ভিজিট করে সংস্কার করতে পারেন। তাহলে সৌন্দর্য্যহানি হয় না।’

নগরীর স্পিডবোট ঘাট সংলগ্ন বাঁধের পাশে পিঠা বিক্রি করেন মনিরুন্নাহার। তিনি বলেন, ‘আমাগো এই সাইডের বাঁধ ভাঙ্গা বছর তিনেক তো হইবেই। খুবই খারাপ অবস্থা। আমরা যে রাস্তার উপর দিয়া হাটতাম, হেডাও ভাইঙ্গা গেছে বাঁধ ডাইব্বা যাওনে। এয়া সংস্কারও হয় না, কেউ দেখতেও আয় না।’

বরিশাল সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৬ সালে বরিশালের কীর্তণখোলা নদীর পারে সাগরদি খালের মুখ থেকে চরকাউয়া খেয়াঘাট পর্যন্ত শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এর মধ্যে ২৫ কোটি টাকা দিয়ে বাঁধ ও বাকি টাকা দিয়ে বাঁধের উপর সড়ক নির্মাণ করা হয়।

নদী দখলের অভিযোগ ওঠায় এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নেয়ায় হাইকোর্টে একটি রিট হলে বাঁধের কাজ শেষ পর্যায়ে সে বছরই বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে সাগরদি খালের মুখের ছোট ব্রিজ ও শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর নিচ পর্যন্ত বাঁধ ও সড়কের কাজ ঝুলে গেছে।

পরবর্তীতে যতটুকু বাঁধ নির্মাণ হয়, তার উপরেই সড়ক তৈরি করে সিটি করপোরেশন।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন বরিশাল জেলা কমিটির সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন শিবলু বলেন, ‘সম্ভবত এখানেও বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতি হয়েছে। এই বাঁধে ত্রুটি দেখা গেছে আরও ২/৩ বছর আগে থেকেই। সিটি করপোরেশনের গাঁ ছাড়া ভাব।

‘মানুষের দুর্ভোগ কমাতে এগুলো ভালোভাবে সংস্কার করা উচিত। এমন ভাবে পড়ে থাকলে তো শহরই পুরোপুরি ঝুঁকিতে। যে উদ্দেশ্যে বাঁধ করা, সেই বাঁধেই যদি ধস হয় সেটা নিয়ে তো ভালো মাথাব্যথা থাকা উচিত সিটি করপোরেশনের।’

বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুখ হোসেন বলেন, ‘শহর রক্ষা বাঁধের ধ্বসের বিষয়টি আমাদের নলেজে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে এবং ধসের জায়গাগুলো প্রকৌশল বিভাগকে পরিদর্শনের জন্য বলা হবে। যত দ্রুত সম্ভব যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর