তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী থেকে পদত্যাগে বাধ্য হওয়ার পর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকেও অব্যাহতি দেয়া হয়েছে ডা. মুরাদ হাসানকে।
শুক্রবার সকালে নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বেলাল হোসেন।
তিনি বলেন, মুরাদ হাসান আওনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। সম্প্রতি বিতর্কিত বিভিন্ন মন্তব্য করে তিনি দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। তাই দলের গঠনতন্ত্রের ৪৭ (৯) ধারা অনুযায়ী কার্যনির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্তে বৃহস্পতিবার তাকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
বেলাল হোসেন বলেন, ‘মুরাদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে দ্রুত অব্যাহতিপত্র পাঠানো হবে।’
এর আগে ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক পদ ও পরদিন সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেয়া হয়। সবশেষ তাকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হলো।
সম্প্রতি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে তিনি সমালোচনার মুখে পড়েন। তার বক্তব্যের সমালোচনায় সোচ্চার হয়েছিলেন নারী অধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সে সময় প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেয়ার দাবি ওঠে।
এর মধ্যেই চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে তার একটি ফোনালাপ ভাইরাল হয়। সেখানে মাহিকে তার কাছে যেতে জোর করতে দেখা যায়। না গেলে রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের দিয়ে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিতে দেখা যায়।
একই সঙ্গে অশালীন ভাষায় মাহির সঙ্গে কথা বলতে শোনা যায় এবং তার কাছে গেলে ধর্ষণ করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন তিনি।
এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বিরুদ্ধেও আপত্তিকর ও অবমাননাকর বক্তব্য রাখেন আরেকটি অনলাইন আলোচনায়।
এসব বিতর্কিত বক্তব্যের জন্য মুরাদকে বহিষ্কারে বিএনপি, নাগরিক সমাজ, নারী অধিকারকর্মী ও ছাত্রলীগের নারী কর্মীদের দাবির মুখে সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুরাদকে মঙ্গলবারের মধ্যে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। ওই দিনই পদত্যাগ করেন মুরাদ হাসান।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাত ১টা ২০ মিনিটে কানাডার উদ্দেশে উড়াল দেন মুরাদ। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এমিরেটস এয়ারলাইনসের ফ্লাইট ইকে ৮৫৮৫-এ বিমানে করে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন।