নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীর টাউন হল মোড়ের নোয়াখালী সমবায় ব্যাংক মার্কেট অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে নামমাত্র দামে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ, জনস্বাস্থ্য বিভাগের কাছ থেকে পাওয়া জমিটি অনুমতি ছাড়াই একটি ডেভেলপার কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। ওই সম্পত্তির মূল্য কমপক্ষে ১৪ কোটি টাকা হলেও বিক্রি করা হয়েছে মাত্র ১ কোটি ৬০ লাখ টাকায়।
এ নিয়ে ওই মার্কেটে দোকান বরাদ্দ পাওয়া ব্যবসায়ীরা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জেলা প্রশাসক, সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক এবং স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও সচিবের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
দোকানমালিক লিয়াকত আলী খান, দলিলুর রহমান দুলাল, রাশেদুল ইয়াছিন চৌধুরী মিঠু নিউজবাংলাকে জানান, গণপূর্ত বিভাগের নামে থাকা এম আর আর ৩ নম্বর খতিয়ানের ১৪১৫ দাগে ১ একর ৩০ শতাংশ সম্পত্তি পেয়েছিল জনস্বাস্থ্য বিভাগ। জনস্বাস্থ্য বিভাগ সেখান থেকে ১৪ শতাংশ জমি ১৯৮২ সালের ৭ অক্টোবর রেজিস্ট্রি চুক্তিপত্রের মাধ্যমে শর্তসাপেক্ষে নোয়াখালী সমবায় ব্যাংক লিমিটেডকে হস্তান্তর করে।
হস্তান্তর দলিলের ২ নম্বর শর্ত ছিল, ওই জমি জনস্বাস্থ্য বিভাগের পূর্ব অনুমতি ছাড়া কারও কাছে বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারবে না।
তারা আরও জানান, ওই জমি বুঝে নেয়ার পর সমবায় ব্যাংক লিমিটেড সেখানে ভবন নির্মাণ করতে ১৯৮৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে দোকানঘর বরাদ্দের আবেদন চায়।
আবেদনকারীদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ১৯ জনকে ৫০ হাজার টাকা করে একটি দোকানঘর বরাদ্দ দেয় সমবায় ব্যাংক লিমিটেড। এর পর থেকে সেই দোকানে ব্যবসা করে আসছিলেন তারা।
তাদের অভিযোগ, চলতি বছরের ৪ অক্টোবর নোয়াখালী সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক আজাদ ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বেলাল হোসেন জনস্বাস্থ্য বিভাগ ও সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধকের অনুমতি ছাড়াই চুক্তিভঙ্গ করে মার্কেটটি নামমাত্র দামে একটি ডেভেলপার কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেন।
তাদের দাবি, শহরের কেন্দ্রস্থলে ১৪ শতাংশ ওই জমির বর্তমান বাজার দর প্রতি শতাংশ ১ কোটি টাকা করে কমপক্ষে ১৪ কোটি টাকা। তবে তা বিক্রি করা হয়েছে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকায়। মাকের্টটি বিক্রি করে দেয়ায় সমবায় সমিতিতে তাদের শেষ সম্বলটিও আর থাকল না। এতে তাদেরকে পথে বসতে হবে।
এ বিষয়ে নোয়াখালী সমবায় ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক আজাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
নোয়াখালী জনস্বাস্থ্য বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ চন্দ্র দাস জানান, নোয়াখালী সমবায় ব্যাংকের মার্কেট বিক্রির বিষয়ে দোকানমালিকদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। মাকের্টটি বিক্রির আগে তাদের অনুমতি না নেয়ায় সমবায় ব্যাংকে নোটিশ দেয়া হয়েছে।
শর্ত মোতাবেক সমবায় সমিতির ওই জায়গা বিক্রির সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সমবায় অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের যুগ্ম নিবন্ধক আশীষ কুমার বড়ুয়া জানান, নোয়াখালী সমবায় দোকানমালিক কল্যাণ সমিতির একটি অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে।