ফেনীতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিভিন্ন মন্দির ও দোকানপাটে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ফেনী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আতাউল হকের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার দিন সেখানে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে তারা।
তদন্ত দল সরেজমিন গাজীগঞ্জ মহাপ্রভুর আশ্রম, ট্রাংক রোডের কালীমন্দির, ফেনী বড় বাজারের কালীমন্দির এলাকা পরিদর্শন করে। তারা ঘটনাস্থলের পাশে অবস্থিত দোকানের মালিক, কর্মচারী, স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও উপস্থিত লোকজনের সঙ্গে ঘটনার বিষয়ে কথা বলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা দুর্গাপূজা দশমীর পরের দিন রাত ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত মহাপ্রভুর আশ্রমে ভাঙচুর, তাণ্ডবসহ ওই রাতের ঘটনা তদন্ত টিমের কাছে বর্ণনা করেন। এ সময় ১১ জন স্থানীয় সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। এ ছাড়া ভাঙচুরের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা জহির আহমদ মজুমদার জানান, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন মামলায় ২৮ অক্টোবর দেয়া আদেশে কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও রংপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন মন্দির ও দোকানপাটে হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়ে জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
তদন্ত কমিটির পরিদর্শনের সময় আশ্রমের সেবায়েত, মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৬ অক্টোবর রাতে ফেনী শহরের কালীপাল গাজীগঞ্জ মহাপ্রভুর আশ্রম, ট্রাংক রোড ও বড় বাজারের দুটি কালীমন্দিরসহ শহরের তাকিয়া রোডে হিন্দুদের বেশ কিছু দোকানপাটে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
এসব ঘটনায় পরে পুলিশ, র্যাব ও মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে ফেনী মডেল থানায় মোট চারটি মামলা করা হয়। র্যাব ও পুলিশের অভিযানে এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তাদের মধ্যে মন্দিরে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১০ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।