বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ত্রিমুখী দ্বন্দ্বে বন্ধ সেতুর কাজ, দুর্ভোগ ৩ লাখ বাসিন্দার

  •    
  • ১০ ডিসেম্বর, ২০২১ ০৮:২৮

স্থানীয়রা জানান, সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সদর উপজেলার ৫ ইউনিয়নের প্রায় ৩ লাখ মানুষ। কাঠের সাঁকো দিয়ে চলতে গিয়ে নানা দুর্ঘটনায় পড়ছেন পথচারীরা। দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভাব পড়েছে কৃষি ও ব্যবসার ওপরও।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর জেসি সড়কে ৯০ মিটার সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। কাজ শেষ না হওয়ায় ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত সময় বাড়ানোও হয়। তবে শেষ হয়েছে ৭০ ভাগ কাজ।

অভিযোগ, পল্লি সড়কে গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৫ কোটি ৫২ লাখ ৯০ হাজার টাকার প্রকল্পটির কাজ পায় কুড়িগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স বসুন্ধরা অ্যান্ড আবু বকর জেভি। তবে কাজটি তারা করেনি। তাদের কাছ থেকে কাজটি নিয়ে করছে মেসার্স আল-আমিন ট্রেডার্স নামে আরেক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

এই দুই প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মধ্যে ত্রিমুখী দ্বন্দ্বে আটকে গেছে সেতুর কাজ। সময়মতো কাজ শেষ না হওয়ায় এর মধ্যে গত মাসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে এলজিইডি।

এর আগেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রায় ২ কোটি ৪২ লাখ টাকার বিল তুলে নিয়েছে। তবে গত তিন-চার মাস আগে থেকেই কাজ বন্ধ রেখেছে তারা। এখন চুক্তি বাতিল হওয়ায় সেতুর ভবিষ্যৎ নিয়েই তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

স্থানীয়রা জানান, সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন সদর উপজেলার ৫ ইউনিয়নের প্রায় ৩ লাখ মানুষ। কাঠের সাঁকো দিয়ে চলতে গিয়ে নানা দুর্ঘটনায় পড়ছেন পথচারীরা। দুর্বল যোগাযোগব্যবস্থার প্রভাব পড়েছে কৃষি ও ব্যবসার ওপরও।

পাঁচগাছী ইউনিয়নের ঝাকুয়া পাড়া গ্রামের সাহাদ আলী বলেন, ‘ঠিকাদার আর অফিসের দ্বন্দ্বের কারণে দীর্ঘদিন ধরে সেতুর কাজ বন্ধ রয়েছে। এই এলাকার মানুষ বহু কষ্টে থাকলেও কেউ গুরুত্বই দিচ্ছে না।’

একই ইউনিয়নের উত্তর নওয়াবশ গ্রামের নূর মোহাম্মদ জানান, সেতুর কাজ শেষ না করায় উত্তর পাশের জমিতে পানি আটকে রয়েছে। পানি না নামায় এলাকার প্রায় শতাধিক কৃষক আবাদ করতে পারছেন না।

কদমতলার বাসিন্দা আদুরী বেগম জানান, সেতু না থাকায় বেড়েছে যাতায়াত খরচ। রোগীদের হাসপাতালে নিতে হয় প্রায় ২০-২৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে।

পাঁচগাছী বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুস শাফী জানান, যোগাযোগব্যবস্থা খারাপ হওয়ায়ে গ্রামের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। শহর থেকে কাঠের সাঁকো পর্যন্ত পণ্য এনে হেঁটে পার করতে হয়। এতে তিন দফা খরচ হয় তাদের।

তিনি বলেন, ‘সেদিন সবজির বস্তা পার করতে গিয়ে কাঠের সাঁকোতে পা পিছলে কেটে গেছে। এই ব্রিজ না হওয়ায় সবাই দুর্ভোগে আছি, যেটা বলার ভাষা নেই।’

মেসার্স আল-আমিন ট্রেডার্সের ঠিকাদার গোলাম রব্বানী বলেন, ‘টেন্ডারের মাধ্যমে সেতু নির্মাণের কাজ পেয়েছে কুড়িগ্রামের মেসার্স বসুন্ধরা অ্যান্ড আবু বকর জেভি। তাদের কাছ থেকে কাজটি আমমোক্তারনামা করে নিয়ে কাজ করছি আমি।’

তিনি অভিযোগ করেন, এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর অসহযোগিতা এবং ১০ লাখ টাকার ওপরে কমিশন চাওয়ায় কাজটি শেষ করতে পারেননি তিনি। সেই দ্বন্দ্বে কর্তৃপক্ষ তার কাজের চুক্তিপত্র বাতিল করেছে।

তিনি জানান, এ নিয়ে তিনি হাইকোর্টে একটি রিট করেছেন। হাইকোর্ট থেকে তাকে তিন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে বললেও কর্তৃপক্ষের জন্য পারছেন না।

মেসার্স বসুন্ধরা অ্যান্ড আবু বকর জেভির ঠিকাদার কেএম বদরুল আহসান মামুন বলেন, ‘কিছু জটিলতার কারণে সেতুর কাজ সময়মতো শেষ হয়নি। তাই কাজের চুক্তিপত্র বাতিল হয়েছে। তবে হাইকোর্টে আমাদের প্রতিষ্ঠানের কেউ রিট করেনি। সদর থানায় এই বিষয়ে একটি জিডি করা হয়েছে।’

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান জানান, সময়মতো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুর কাজ শেষ করতে না পারায় চূড়ান্ত নোটিশ দেয়া হয়। এরপর বিধি মোতাবেক সেতুর চুক্তিপত্র বাতিল করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘গোলাম রব্বানী নামে কোনো ঠিকাদারের সঙ্গে এলজিইডির চুক্তি নেই। তাই বাইরের কেউ কী অভিযোগ করল সে বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’

এ বিভাগের আরো খবর