বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সহজ ও হয়রানিমুক্ত কর আইন চান ব্যবসায়ীরা

  •    
  • ৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ২২:৩৬

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, ‘নতুন আইনটি এমন হওয়া উচিত যাতে রাজস্ব আহরণ বাড়ে এবং ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত হয়।’

নতুন যে কর আইন আসছে তাতে আদায় প্রক্রিয়া সহজ ও হয়রানিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত হওয়া দেখতে চান ব্যবসায়ীরা। প্রস্তাবিত আইনের খসড়াটি অংশীজনের মতামত এবং সময় নিয়ে চূড়ান্ত করার প্রস্তাব করেছেন তারা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে এক আলোচনা সভায় এমন অভিমত দেন ব্যবসায়ীরা। ঢাকায় কর্মরত অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম-ইআরএফ এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভলপমেন্ট (বিল্ড) যৌথভাবে এই আলোচনার আয়োজন করে।

ইআরএফ কার্যালয় মিলনায়তনে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। অনুষ্ঠানে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, গবেষক, ব্যবসায়ী নেতাসহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্নেহাশীষ বড়ুয়া, এফসিএ।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সম্ভাবনার পাশাপাশি চ্যালেঞ্জও রয়েছে। বড় চ্যালেঞ্জ হলো অম্ভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ তথা রাজস্ব আয় বাড়ানো। দেশে জিডিপির তুলনায় রাজস্ব আদায় অনেক কম। এ অবস্থায় নতুন আইনে কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিতে

বিদ্যমান কর আইনটি ১৯৮৪ সালের। এটি বেশ জটিল। ফলে নতুন আইন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে আইনের খসড়া তৈরি করেছে এনবিআর। এখন ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত নেয়ার জন্য তা ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে।

সবার মতামত পাওয়ার পর এটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর তা পাসের জন্য জাতীয় সংসদে পেশ করা হবে।

এনবিআর কর্মকর্তারা বলেন, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে আগামী অর্থবছরেই আইনটি কার্যকর করা। নতুন আইনটি বাংলা ভাষায় করা হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলেন, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিবেচনায় আইনটি গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাড়াহুড়ো না করে আরও সময় নিয়ে আইনটি চূড়ান্ত করা প্রয়োজন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মসিউর রহমান বলেন, ‘নতুন আইন এমন হওয়া উচিত যাতে রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি পায় এবং ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘এনবিআরের গবেষণা ও পরিসংখ্যান বিভাগ খুবই দুর্বল। এই বিভাগকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।’

এনবিআরের প্রথম সচিব শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘মোট আয়কর ফাইলের মাত্র তিন শতাংশ অডিট হয়। কাজেই ঢালাওভাবে হয়রানির অভিযোগ সঠিক নয়।

‘আয়কর আইন খুবই জটিল। এই আইন আম-জনতা সহজেই বুঝবে এমনটা ধারণা করা ঠিক নয়। তবে আমরা নতুন আইন সহজ করার চেষ্টা করছি।’

মূল প্রবন্ধে নতুন আইনের দুর্বল দিকগুলো তুলে ধরেন স্মেহাশীষ বড়ুয়া। আইনটি বাস্তবায়ন হলে চাকরিজীবীসহ মধ্যবিত্তদের ওপর করের চাপ বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

বিল্ডের চেয়ারম্যান ও ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা কর দিতে চান। কিন্তু কর আদায় করতে গিয়ে যদি নাজেহাল হতে হয় তাহলে তারা কর প্রদানে নিরৎসাহিত হবেন। করের ভিত্তি কম, কিন্তু রেট (হার) বেশি- এমন নীতি গ্রহণযোগ্য নয়।’

বিদ্যমান কর আইনের সুবিধাগুলো নতুন আইনে বহাল রাখার প্রস্তাব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. স্বপন কুমার বালা।

রি-কন্ডিশন্ড গাড়ি মালিকদের সংগঠন বারভিডার সভাপতি আব্দুল হক কর কর্মকর্তাদের ঐচ্ছিক ক্ষমতা বাতিলের পরামর্শ দেন।

খসড়া আইনে মোট ৩৫৩টি ধারা রাখার প্রস্তাব করেছে এনবিআর গঠিত এ সংক্রান্ত কমিটি। আব্দুল হক মনে করেন আইনে এতো বেশিসংখ্যক ধারা রাখার দরকার নেই। তার মতে, ধারা যত কম হবে আইন ততো সহজ হবে।

ইন্টারন্যাশরাল বিজনেস ফোরামের সভাপতি হুমায়ন রশিদ বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের অবিশ্বাস করা ঠিক নয়। নতুন আইনে ন্যায্যতা নিশ্চিত করা দরকার।’

সনদপ্রাপ্ত হিসাববিদদের সংগঠন আইসিএবির সাবেক সভাপতি হুমায়ূন কবির এফসিএ বলেন, ‘ব্যক্তির স্বার্থে আইন করা যাবে না। নতুন আইনে উৎপাদনমুখী শিল্প যাতে বেশি গুরুত্ব পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

আইসিএবির বর্তমান সভাপতি মাহমুদুল হাসান খসরু সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে আইনের খসড়া চূড়ান্ত করার পরামর্শ দেন।

নতুন আইনে শেয়ারবাজারে কর সুবিধা বাতিল করার যে প্রস্তাব এসেছে তার বিরোধিতা করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান। তিনি বলেন, ‘এটা করা হলে দেশের শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আর অডিটের নামে হয়রানি বন্ধ করতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর