কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় নিজ বাসা থেকে এক পাথর ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহের পাশেই মিলেছে একটি চিঠি। তাতে লেখা রয়েছে, পাওনা টাকা না পাওয়ায় আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
মৃত ওই ব্যবসায়ীর নাম সিরাজুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ভেড়ামারা শহরের নওদাপাড়া এলাকার সজনী সিনেমা হলের পেছনের বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান।
ওসি জানান, মরদেহের পাশে পাওয়া চিরকুটে লেখা ছিল, ‘ভেড়ামারা শহরের বামনপাড়ার আব্দুস সালাম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের বাবুপুরের মনিরুজ্জামান মনিরের কাছে ৩০ লাখ টাকা পাই। টাকা না দিয়ে মনির ও সালাম এক হয়ে আমার বিরুদ্ধে যড়যন্ত্র করতে থাকে। তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও টাকা না দেয়ায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিলাম।’
সিরাজুলের পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি বুধবার রাতের কোনো এক সময় বিষপান করেন। ঘরের আড়ার সঙ্গে রশি দিয়ে ফাঁসও নেন তিনি। এতে ঘরের আড়া ভেঙে গেছে। তবে তার মৃত্যু হয়েছে বিষপানের জন্য।
সিরাজুলের স্বজন জাহাঙ্গীর হোসেন জুয়েল বলেন, ‘সিরাজুল ভেড়ামারা এলাকার সবচেয়ে বড় পাথর ব্যবসায়ী। তিনি সাদাসিধা মানুষ হিসেবে পরিচিত। সালাম ও মনির তার সঙ্গে পার্টনারশিপে ব্যবসা করতেন। তারা একসঙ্গে দর্শনা বর্ডার দিয়ে ট্রেনে পাথর নিয়ে আসতেন।
‘ভেড়ামারায় ট্রেন থেকে পাথর নামিয়ে তারা ভাগাভাগি করে নিতেন। কিন্তু করোনার মধ্যে ব্যবসা প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের সম্পর্কের অবনতি হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছু পাওনাদার সিরাজুলকে চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু সালাম ও মনিরের কাছে হিসাবে পাওনা ৩০ লাখ টাকা চাইলে তারা দিতে রাজি হননি, উল্টো তাকেই ব্যবসা নষ্ট করার জন্য দোষারোপ করতে থাকেন। এ কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন।’
সিরাজুলের ছেলে মো. রাজ বলেন, ‘আব্দুস সালাম ও মনির পাওনা টাকা না দিয়ে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছিল। তাদের বিচার চাই।’
ওসি মজিবুর রহমান জানান, পুলিশ মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে সব জানা যাবে।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এখনও কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’