বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘আমি কি ছেলেকে আর ফিরে পাব না’

  •    
  • ৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৬:৩১

জাহেদুলের মা খোরশিদা বেগম বলেন, ‘শুধুই বলছে টাকা লাগবে। বন্ধুত্ব হওয়ার পর ফাঁদ পেতে নেয়া হয়েছে। কিন্তু টাকা দিব বললেও ফোন কেটে দিচ্ছে। এত নিষ্ঠুরভাবে কথা বলছে। আমি কি ছেলেকে আর ফিরে পাব না?’ 

বেড়াতে নেয়ার কথা বলে ছেলেকে ডেকে নিয়ে গেছে কটেজের দুজন। সেখানে নেয়ার পর ফোন করে বলছে, টাকা দিতে হবে জনপ্রতি ৫ লাখ করে। না দিলে গলাকেটে লাশ দেবে। বারবার টাইম দিচ্ছে টাকা দেয়ার জন্য।

কথাগুলো কক্সবাজারের রামু থেমে অপহরণের শিকার চার কিশোরের মধ্যে কায়সারের মা জাহানারা বেগমের।

অপহৃত আরেক কিশোর জাহেদুলের মা খোরশিদা বেগম বলেন, ‘শুধুই বলছে টাকা লাগবে। বন্ধুত্ব হওয়ার পর ফাঁদ পেতে নেয়া হয়েছে। কিন্তু টাকা দিব বললেও ফোন কেটে দিচ্ছে। এত নিষ্ঠুরভাবে কথা বলছে। আমি কি ছেলেকে আর ফিরে পাব না?’

সন্তানদের ফিরে পাওয়া নিয়ে বৃহস্পতিবার এভাবেই নিউজবাংলার কাছে নিজেদের শঙ্কার কথা জানান অপহৃত দুই কিশোরের মা।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে রামুর পেচারদ্বীপ এলাকার একটি কটেজের দুই কর্মচারী স্থানীয় চার কিশোরকে নিয়ে বের হন। এক দিন পর তাদের মুক্তিপণ হিসেবে চাওয়া হচ্ছে ২০ লাখ টাকা।

চার কিশোর হলো রামুর পেচারদ্বীপের মংলা পাড়া এলাকার আব্দুর রহিমের ১৪ বছরের ছেলে মোহাম্মদ কায়সার, একই এলাকার মোহাম্মদ আলমের ১৪ বছরের ছেলে মিজানুর রহমান নয়ন, আব্দুস সালামের ১৫ বছরের ছেলে জাহেদুল ইসলাম ও ফরিদুল আলমের ১৪ বছরের ছেলে মিজানুর রহমান। তাদের মধ্যে জাহেদুল সোনারপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণি ও বাকিরা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে।

রামু থানায় দেয়া অভিযোগ থেকে জানা যায়, পেচারদ্বীপ এলাকার কটেজ বাতিঘরের কর্মচারী জাহাঙ্গীর আলম ও মো. ইব্রাহীমের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়েছিল স্থানীয় ওই চার স্কুলছাত্রের। সেন্ট মার্টিন দ্বীপে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে তাদের টেকনাফের হোয়াইক্যং এলাকায় নিয়ে যান দুই কর্মচারী।

এরপর ২৪ ঘণ্টা তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এক দিন পর বুধবার চার ছাত্রের স্বজনদের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে চাওয়া হয় ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ। টাকা না দিলে মরদেহ ফেরত দেয়ার হুমকি দিচ্ছে অপহরণকারীরা।

অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, কটেজ কর্মচারী ইব্রাহীম ও জাহাঙ্গীর দুজনই রোহিঙ্গা। তাদের মধ্যে জাহাঙ্গীর টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ২৬ নম্বর ব্লকের মোহাম্মদ কাছিমের ছেলে। তার সহযোগী মোহাম্মদ ইব্রাহীমের বাড়িও সেখানে।

কিশোর জাহেদুলের বাবা আব্দুস সালাম বলেন, ‘বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে নিয়ে গেছে ওই দুজন। যাওয়ার পর কখন বাড়ি ফিরছে খোঁজখবর নিতে ফোন দিলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ ছাড়া জাহাঙ্গীর ও ইব্রাহীমের মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে বুধবার দুপুরে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী পরিচয়ে মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করছে।’

এ ঘটনায় রামু থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রামু থানা পুলিশ বলছে যেহেতু বিষয়টি টেকনাফ থানায় তাই তারা সেখানে অভিযোগটা দিতে বলেছেন। পাশাপাশি তারাও তাদের অবস্থান থেকে চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছে।’

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরুপ কুমার চৌধুরী নিউজবাংলাকে জানান, ঘটনাটি টেকনাফ থানা এলাকায় পড়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্তে তাদের সহযোগিতা করব। নিজেদের জায়গা থেকে যতটুকু পারা যাবে ততটুকুই চেষ্টা করবে পুলিশ।

এ বিভাগের আরো খবর