বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদসহ তিন আসামির কারাদণ্ড দিয়ে বিচারিক আদালতের দেয়া রায় সংশোধন করে তাদের আপিল আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। রায়ে আদালত বলেছে, মামলার আসামিরা যে সাজা খেটেছেন, সে পর্যন্তই তাদের সাজা।
বিচারপতি মো. সেলিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ রায় দেয়।
মামলায় এমপি হারুন ছাড়াও চ্যানেল নাইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এনায়েতুর রহমান বাপ্পী ও ইশতিয়াক সাদেক।
আদালতে আপিল আবেদনের পক্ষে ছিলেন মাহবুব উদ্দিন খোকন, সৈয়দ মিজানুর রহমান ও এইচ এম সানজীদ সিদ্দিকী। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
পরে আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘বিচারিক আদালতের সাজা পরিবর্তন করে আদালত মোডিফাই (সংশোধন) করে আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। রায়ে আদালত এমপি হারুন অর রশীদ যে ১৬ মাস সাজা খেটেছেন, সেটি বহাল রেখেছেন। সেই সঙ্গে তাকে দেয়া অর্থদণ্ড বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।’
হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করবেন বলেও জানান আইনজীবী খোকন। তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের এ রায়ের ফলে হারুন অর রশীদের সংসদ সদস্য পদে থাকতে কোনো আইনি বাধা নেই।’
অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে তাদের আপিল খারিজ হয়েছে। বিচারিক আদালতের সাজা বহাল। তবে যত দিন জেল খেটেছেন (প্রায় ১৬ মাস), সেটাকে দণ্ড হিসেবে গণ্য করে সার্ভ আউট করে দিয়েছেন। মানে হচ্ছে ওনাকে আর জেলে যেতে হবে না।’
শুল্কমুক্ত গাড়ি এনে তা বিক্রি করে আত্মসাতের ঘটনায় দুদকের দায়ের করা মামলায় ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় দেন।
রায়ে এমপি হারুনকে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেন। এ মামলায় আরও দুজনকে সাজা দেয়া হয়েছে। তারা হলেন ব্যবসায়ী এনায়েতুর রহমান ও গাড়ি ব্যবসায়ী ইশতিয়াক সাদেক।
রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৮ অক্টোবর হাইকোর্টে আপিল করেন এমপি হারুন। হাইকোর্ট দীর্ঘ শুনানি করে আজ এ রায় হলো।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, সংসদ সদস্য থাকাবস্থায় শুল্কমুক্ত গাড়ি এনে তা বিক্রির ঘটনায় হারুন অর রশীদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা হয় ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ।
মামলার বাদী হলেন পুলিশের উপপরিদর্শক ইউনুস আলী। মামলাটি তদন্ত করে হারুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ওই বছরের ১৮ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোনায়েম হোসেন। আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে হারুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট বিচার শুরু করেন আদালত।