বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘সড়ক বিভাগের ডিম পাড়া হাঁস’

  •    
  • ৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ০৯:৪৭

ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও নতুন সেতু নির্মাণে কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি সড়ক ও সেতু বিভাগের, বরং প্রতিবছর সেতু সংস্কারে ব্যয় করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। শেষ পাঁচ বছরেই সেতুটি সংস্কারে ব্যয় হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা। 

বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের ঝালকাঠির বাসন্ডা নদীর ওপর আশির দশকে নির্মাণ করা হয়েছিল ১২০ মিটার দৈর্ঘ্যের বেইলি সেতু। বর্তমানে সেতুটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেতুটির ওপরের প্লেটেই ৫৮৮টি তালি দেয়া হয়েছে।

বছর পাঁচেক আগে একে ‘ঝুঁকিপূর্ণ সেতু’ ঘোষণাও করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। তারপরও প্রতিদিন এর ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে ভারীসহ বিভিন্ন যানবাহন।

ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলেও নতুন সেতু নির্মাণে কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি সড়ক ও সেতু বিভাগ, বরং প্রতিবছর সেতু সংস্কারে ব্যয় করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। শেষ পাঁচ বছরেই সেতুটি সংস্কারে ব্যয় হয়েছে প্রায় এক কোটি টাকা।

স্থানীয়রা তাই সেতুটির নাম দিয়েছেন ‘সড়ক বিভাগের ডিম পাড়া হাঁস’। তাদের দাবি, এটি যতবার মেরামত করা হয় ততবারই লাভবান হয় ঝালকাঠি সড়ক বিভাগ।

সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, টেন্ডার ছাড়া নিজস্ব তত্ত্বাবধানে বছরে তিনবার সেতুটি মেরামত করে সড়ক বিভাগ। প্রতিবার মেরামতে খরচ হয় ৬ লাখ টাকা।

ঝালকাঠি সড়ক উপবিভাগের প্রকৌশলী হুমায়ুন কবিরের দেয়া হিসাব অনুযায়ী, সেতুটির কিছু প্লেট পরিবর্তন ও ঝালাইয়ের কাজে গত পাঁচ বছরে তাদের ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ কোটি টাকা।

গাবখান টোলপ্লাজা থেকে জানা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ শতাধিক ভারী যানবাহন চলাচল করে। বারবার মেরামত করা হলেও সেতুটি কয়েক দিনের মধ্যেই ফের যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। নাট-বল্টু খুলে পড়ার পাশাপাশি ফেটে যাচ্ছে প্লেট।

সেতুর নাট-বল্টু খুলে পড়ার পাশাপাশি ফেটে যাচ্ছে এর প্লেটও।

স্থানীয়রা জানান, সেতুটি ভেঙে পড়লে ঝালকাঠি থেকে পিরোজপুর, বাগেরহাট, খুলনা ও যশোরের সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।

পিরোজপুর থেকে ভোলাগামী ট্রাকচালক ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘লোড গাড়ি লইয়া ব্রিজে উটলে বুকটা ধরফর করতে থাহে, কুনসুমজানি ভাইঙা পড়ি।’

বরিশাল থেকে খুলনাগামী ধানসিঁড়ি পরিবহনের বাসচালক ইদ্রিস হাওলাদার বলেন, ‘ব্রিজে গাড়ি উঠলে দুলতে থাকে। মনে হয় ভূমিকম্প হইতেছে, এখানে দ্রুত নতুন ব্রিজ বানানো দরকার, তা না হইলে যেকোনো সময় এইটা ভাইঙা পড়বে।’

এ রুটে নিয়মিত চলাচলকারী বাস ডলফিন পরিবহনের চালক মালেক হাওলাদার বলেন, ‘রাতে ব্রিজ পার হওয়ার সময় যে শব্দ হয় তাতে মনে হয় গাড়ির চাকা থেকে টায়ার খুলে গেছে। ব্রিজটি ভেঙে পড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। মেরামতে আর কাজ হবে না। এখন নতুন করে নির্মাণ করা দরকার।’

সেতু এলাকার বাসিন্দারা জানান, রাতে সেতুতে ভারী গাড়ি উঠলে প্লেটের বিকট শব্দে ঘুমন্ত শিশুরা কেঁপে ওঠে। শব্দ থামানোর জন্য মাঝে মাঝে প্লেটের জয়েন্টগুলো কর্তৃপক্ষ দায়সারাভাবে ঝালাই করে। সেতুটি যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। গাড়ি নিয়ে ভেঙে পড়লে বড় ধরনের প্রাণহানি হবে।

ঝালকাঠি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাবিল হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ বাসন্ডা বেইলি সেতুটি কংক্রিট দিয়ে নির্মাণ করার জন্য ডিজাইন ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ডিপিপি বাস্তবায়ন হলে শিগগিরই এখানে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।’

সওজের বরিশাল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মো. তারেক ইকবাল নিউজবাংলাকে বলেন,

ফলোআপ প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির জন্য ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালকের কাছে সম্ভাব্য সেতুর যে তালিকা চূড়ান্ত করার জন্য চিঠি দেয়া হয়েছে তার মধ্যে বাসন্ডা সেতুটি রয়েছে। অনুমোদন পেলেই নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।

এ বিভাগের আরো খবর