ভুলের জন্য মা-বোনদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার পরের দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও ক্ষমা চেয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে সদ্য পদত্যাগ করা আলোচিত রাজনীতিক মুরাদ হাসান।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বুধবার বিকেলে দেয়া এক স্ট্যাটাসে ক্ষমা চান মুরাদ।
তিনি লেখেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পরম শ্রদ্ধেয় মমতাময়ী মা, বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা, আমি যে ভুল করেছি তা আল্লাহর ওয়াস্তে আমাকে মাফ করে দিবেন।’
প্রধানমন্ত্রীর নেয়া যেকোনো সিদ্ধান্ত তিনি ‘মাথা পেতে’ নেবেন বলেও স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন।
তিনি লিখেন, ‘আপনি যে সিদ্ধান্ত দিবেন তা আমি সবসময়ই মাথা পেতে নেব আমার বাবার মতো।’
মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে ‘মা-বোনদের’ কাছে ক্ষমা চান মুরাদ।
ওই দিন স্ট্যাটাসে মুরাদ লেখেন, ‘আমি যদি কোনো ভুল করে থাকি অথবা আমার কথায় মা-বোনদের মনে কষ্ট দিয়ে থাকি, তাহলে আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মমতাময়ী মা দেশরত্ন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার সব সিদ্ধান্ত মেনে নেব আজীবন।’
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মঙ্গলবার রাতেই গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
নারীর প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য ও ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে মুরাদ হাসান মঙ্গলবার ওই পদত্যাগপত্র পাঠান।
মঙ্গলবার রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র গ্রহণের তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। রাতেই তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়।
রাষ্ট্রপতির আদেশে প্রজ্ঞাপনে সই করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিবের রুটিন দায়িত্বে থাকা সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. কামাল হোসেন।
তাতে বলা হয়, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব মো. মুরাদ হাসানের পদত্যাগপত্র মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে।’
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী বরাবর লেখা পদত্যাগপত্রে মুরাদ লেখেন, ‘প্রতিমন্ত্রীর পদ হতে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ।’
তিনি ভেতরে লিখেছেন, ‘গত ১৯ মে ২০২১ (প্রকৃতপক্ষে ২০১৯) আমাকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। আমি অদ্য ০৭. ১২. ২০২১ তারিখ হতে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব হতে ব্যক্তিগত কারণে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক…আমাকে দায়িত্ব হতে অব্যাহতি প্রদানের লক্ষ্যে পদত্যাগপত্রটি গ্রহণে আপনার একান্ত মর্জি কামনা করছি।’
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী হিসেবে মুরাদ হাসান তার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে, তবে সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
এ বিষয়ে সংবিধানের ‘প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা’ শিরোনামে দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে তথা ৫৮ অনুচ্ছেদের ১-এ বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ব্যতীত অন্য কোনো মন্ত্রীর পদ শূন্য হইবে, যদি (ক) তিনি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করিবার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট পদত্যাগপত্র প্রদান করেন।’