ভারতকে সঙ্গে নিয়ে নেপাল ও ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এতে ঢাকা ও নয়াদিল্লি উভয়েই উপকৃত হতে পারে। আর এটি হবে গ্রিন এনার্জি এবং সাশ্রয়ী।
গণভবনে বুধবার সকালে ঢাকা সফরে আসা ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা দেখা করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
সৌজন্য সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা বলেছেন যে নেপাল ও ভুটানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করে উভয় দেশই উপকৃত হতে পারে।’
হর্ষবর্ধন শ্রিংলা জানিয়েছেন, ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) বৈঠকের মাধ্যমে দু’দেশের সীমান্তের ছোট-বড় সব সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। আমরা চাই এসব সমস্যার সমাধান হোক।’
প্রধানমন্ত্রীও এতে সম্মত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব।
সাক্ষাতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছে দেন শ্রিংলা। শেখ হাসিনাও ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের মাধ্যমে নরেন্দ্র মোদিকে শুভেচ্ছা জানান।
শ্রিংলা কোভিড-১৯ মহামারীকালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং বলেন, ‘ভারতেও ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে।’
বাংলাদেশের ৫০তম বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে আমন্ত্রণ জানানোয় তিনি ধন্যবাদ জানান এবং একে ‘বন্ধুত্বের বিশেষ বন্ধন’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
শ্রিংলা বলেন, ‘ভারত বিশ্বজুড়ে তার মিশনগুলোতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০তম বার্ষিকী পালন করবে। একইসঙ্গে ওইসব দেশের জনগণের মাঝেও বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরা হবে।’
কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হলে জাতিসংঘে ভারত ও বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একটি যৌথ ছবির প্রদর্শনী করবে বলেও আশা করেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ভারত বিনিয়োগ করতে চায় বলে জানান এই কূটনীতিক। তিনি বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শিলিগুড়ি-পার্বতীপুর, ঢাকা-শিলিগুড়ি এবং ঢাকা-জলপাইগুড়ি রেল যোগাযোগ পুনরায় চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশও কোভিড-১৯ মহামারির ধকল সামলে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে।
শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তার লুকিয়ে থাকার দিনগুলোর কথা স্মরণ করেন এবং ভারতের স্বীকৃতি তাদের অভিভূত করেছে বলে উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশে ৯৯ শতাংশেরও বেশি মানুষ বিদ্যুতের আওতায় এসেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে গ্রিডলাইন নেই সেখানে সরকার সৌর বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে।’
ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতি বিষয়ক উপদেষ্টা অশোক মল্লিক এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মু সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এ সময় উপস্থিত ছিলেন।