একই দেশে দুই নীতি থাকা ঠিক না বলে মন্তব্য করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মিলন মেলা ও সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মোকতাদির বলেন, ‘সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে এক মেয়র কটূক্তি করায় তাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৬ থেকে ২৮ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলোসহ ৩০টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগকারীদের কেন শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে না। কেন তাদের আদর সোহাগ করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘একই দেশে দুই নীতি, এটা তো ঠিক না, এর অবসান হোক।’
মোকতাদির আরও বলেন, ‘তারা চেয়েছিল সরকার উৎখাত করতে। সরকার উৎখাত করতে কি মুক্তিযুদ্ধবিজড়িত স্থানগুলোতে ভাঙচুর করা লাগে, রেলস্টেশনে অগ্নিসংযোগ লাগে! আসলে সরকার নয়, তারা দেশের স্বাধীনতা বিনষ্ট করতে চায়।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌলা খাঁন, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান ও মেয়র নায়ার কবির।
হেফাজতের তাণ্ডব
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে ২৬ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়া এলাকার জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুসিয়া মাদ্রাসা থেকে কয়েক হাজার ছাত্রের মিছিল বের হয়। তারা শহরের কেন্দ্রস্থল বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে গিয়ে হামলে পড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে। সেটি ভেঙে আগুন দেয়ার পাশাপাশি তারা আগুন দেয় শহরের রেলস্টেশন, আনসার ক্যাম্প, মৎস্য অধিদপ্তরে।হামলা হয় পুলিশ সুপারের কার্যালয়েও। এ সময় পুলিশ গুলি চালালে একজন নিহত হয়।
পরদিন মহাসড়ক অবরোধ করে পুলিশের ওপর হামলে পড়ে মাদ্রাসাছাত্ররা। তখন পুলিশ গুলি চালালে প্রাণ হারায় পাঁচজন।
নিহত ব্যক্তিদের নিজেদের কর্মী দাবি করে ২৮ মার্চ হরতাল ডাকে হেফাজত। হরতালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলে ব্যাপক তাণ্ডব। বঙ্গবন্ধুর দুটি ম্যুরাল ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত সবগুলো স্থাপনায় ভাঙচুরের পাশাপাশি ধরিয়ে দেয়া হয় আগুন।
হামলা চলে পৌরসভা কার্যালয়, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি কার্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, গণগ্রন্থাগার, সংগীতজ্ঞ আলাউদ্দিন খাঁর স্মৃতিবিজড়িত ‘সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন’ ও মিলনায়তন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়, বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকারের অফিস, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাড়ি এবং সরাইলের খাটিহাতা হাইওয়ে থানায়।