বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মালিক-শ্রমিক সৌহার্দ্য চান প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ১২:৫৪

মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মালিকদের দেখতে হবে শ্রমিকদের অসুবিধা কী, তাদের জীবন-জীবিকা যাতে সুন্দরভাবে চলে, সে ব্যবস্থা করা। শ্রমের ন্যায্য মূল্যটা যেন তারা পায় এবং শ্রম পরিবেশ যেন সুন্দরভাবে থাকে, সেটাও যেমন দেখতে হবে, আবার শ্রমিকদেরও দায়িত্ব থাকবে কারখানাটা সুন্দরভাবে যেন চলে, উৎপাদন ব্যবস্থাটা যেন ঠিক থাকে।’

বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার অনেক সুফল থাকলেও শুরুতে কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কারখানায় কোনো অস্থিরতা চান না সরকারপ্রধান।

তিনি বলেছেন, মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে একটা সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকতে হবে।

ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বুধবার সকালে গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড-২০২০ প্রদান এবং মহিলা কর্মজীবী হোস্টেলসহ নবনির্মিত আটটি স্থাপনা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

গণভবন প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন সরকারপ্রধান।

নির্বাচনি ইশতেহারে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশে হিসেবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তাতে আমরা যেমন অনেক সুবিধা পাব, হয়তো প্রথম দিকে কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। সেগুলো মোকাবিলা করার জন্য আমরা প্রস্তুত। সে জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত মজবুত করার ওপর সরকার জোর দিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এগিয়ে যাব। বাংলাদেশের মানুষ আর কোনো কষ্টে থাকবে না। এ জন্য গ্রামীণ অর্থনীতি যাতে আরও শক্তিশালী হয়, সেখানে অর্থের সরবরাহ হয়, সেই ব্যবস্থাও আমরা নিচ্ছি। কাজেই আমাদের উন্নয়নটা হচ্ছে সমগ্র তৃণমূল পর্যায় থেকে উঠে আসবে।’

লাখো শহীদের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে ব্যর্থ হতে দেয়া হবে না বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘আমি সবসময় একটা অনুরোধই করব আমাদের মালিক এবং শ্রমিক সবাইকে। কারণ শ্রমিক ও মালিকদের একটি সুন্দর সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কারণ মালিকদের সবসময় মনে রাখতে হবে যে শ্রমিকরা শ্রম দিয়েই কিন্তু তাদের কারখানা চালু রাখে এবং অর্থ উপার্জনের পথ করে দেয়। সেই সঙ্গে শ্রমিকদেরও এই কথা মনে রাখতে হবে যে, কারখানাগুলো আছে বলেই তারা কাজ করে খেতে পারছেন; তাদের পরিবার-পরিজনদের পালন করতে পারছেন বা তারা আর্থিকভাবে নিজেরা কিছু উপার্জন করতে পারছেন।’

কারখানা ঠিকমতো না চললে শ্রমিকরাই ক্ষতির মুখে পড়বে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে কারখানা আপনার রুটি-রুজির ব্যবস্থা করে অর্থাৎ খাদ্যের ব্যবস্থা করে, জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে, সেই কারখানার প্রতি যত্নবান হতে হবে। অনেক সময় আমরা দেখি বাইরে থেকে কিছু শ্রমিক নেতা আছেন, তারা উসকানি দেয় এবং অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করে।’

প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে হলে কারখানাগুলোর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সচল রাখার ওপর জোর দেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘প্রতিযোগিতাময় বিশ্বে যদি শিল্প কল-কারখানা, উৎপাদন এবং রপ্তানিটা সঠিকভাবে চলতে হয়, তাহলে কিন্তু কারখানাগুলো যাতে যথাযথভাবে চলে তার ব্যবস্থা নিতে হবে। আর যদি সেখানে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তাহলে কিন্তু এ রপ্তানিও যেমন বন্ধ হবে, তখন কর্মপরিস্থিতিও থাকবে না। নিজেরাও কাজ হারাবেন এবং বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে ঘুরতে হবে। সে কথাটা মনে রেখে শ্রমিকদেরও কিন্তু নিশ্চয়ই একটা দায়িত্ববান ভূমিকা পালন করতে হবে।’

মালিক-শ্রমিক সম্পর্কটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মালিকদের দেখতে হবে শ্রমিকদের অসুবিধা কী, তাদের জীবন-জীবিকা যাতে সুন্দরভাবে চলে, সে ব্যবস্থা করা। শ্রমের ন্যায্য মূল্যটা যেন তারা পায় এবং শ্রম পরিবেশ যেন সুন্দরভাবে থাকে, সেটাও যেমন দেখতে হবে, আবার শ্রমিকদেরও দায়িত্ব থাকবে কারখানাটা সুন্দরভাবে যেন চলে, উৎপাদন ব্যবস্থাটা যেন ঠিক থাকে।’

শ্রমিকদের কল্যাণে সরকারের নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘সবকিছু মিলিয়ে প্রায় ৫৩ হাজার কোটি টাকা আমরা বছরে ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছি, যাতে আমাদের দেশের কোনোকিছুই স্থবির না হয় বা করোনার প্রভাবে যেন কোনো ক্ষতি না হয়।

‘করোনাকালে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছিল সেই সংকটময় মুহূর্তে প্রত্যেকটা কল-কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের মালিক এবং শ্রমিক তারা যেন ঠিকমতো কাজ পায় বা সঠিকভাবে চলতে পারে, তার ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি।’

পরিবেশবান্ধব কারখানা তৈরি করে দেশের পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখা ৩০টি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয় সম্মাননা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশরীরে উপস্থিত থাকতে না পারায় তার পক্ষে বিজয়ীদের সম্মাননা স্মারক ও এক লাখ টাকার চেক তুলে দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।

এ প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্প কল-কারখানায় যাতে গ্রিন ফ্যাক্টরি হয়, সে জন্য বিশেষ সুবিধা দিয়েছি। গ্রিন ফ্যাক্টরি তৈরিতে যেসব পণ্য প্রয়োজন হয়, সেগুলোর ট্যাক্স আমরা কমিয়ে দিয়েছি।’

সরকার শিল্পায়নের ওপর জোর দিয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘সেটা শুধু রাজধানীভিত্তিক বা কয়েকটি জায়গায় না; সারা বাংলাদেশে আমরা বিশেষ শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলছি।

‘সেসব অঞ্চলে কৃষি উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়, কৃষি জমি যাতে রক্ষা পায়, শিল্পায়ন যেন হয় এবং সেটা যেন পরিবেশবান্ধব হয়, সেই ধরনের শিল্পায়নের আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।’

করোনাকালে দেশ পিছিয়ে যায়নি দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের সব মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে গেছি।’

এ বিভাগের আরো খবর