বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শ্রেণিকক্ষ সংকটে জবির ৪ বিভাগ

  •    
  • ৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ১০:১৩

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ‘কক্ষ সংকটের জন্য পরীক্ষা পেছাবে না। আমি বলে দিয়েছি সবাই সবারটা শেয়ার করবে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা। এটা শুধু এক ডিপার্টমেন্টের জায়গা না।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বিজ্ঞান অনুষদের চারটি বিভাগের শ্রেণিকক্ষ সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ না থাকায় বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার কার্যক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভবনে বিভিন্ন বিভাগ স্থানান্তরের কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রশাসন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের নিচতলায় করোনাকালীন বন্ধের আগে ছয়টি ক্লাসরুম ছিল। সেখানে পরিসংখ্যান বিভাগের দুটি কক্ষ, গণিত বিভাগের একটি, রসায়ন বিভাগের একটি এবং উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের একটি শ্রেণিকক্ষ ও একটি সেমিনার কক্ষ ছিল।

পরে নিচতলার পুরোটা সংস্কার করে একপাশে আধুনিক মেডিক্যাল সেন্টার ও অন্যপাশে রেজিস্ট্রার দপ্তরের অফিস করা হয়।

এদিকে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে রয়েছে একটি মাত্র ক্লাসরুম। পাশের ডিপার্টমেন্টগুলোর রুম ধার করে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।

রসায়নের দুটি, গণিতের একটি আর মাঝেমধ্যে পদার্থবিজ্ঞানের রুম নিয়ে পরীক্ষা নিচ্ছে পরিসংখ্যান বিভাগ। উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে পাশের প্রাণিবিদ্যা ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের অধীনের একটি কক্ষে।

এ ছাড়া রসায়ন বিভাগের পরীক্ষা নেয়ার সময় পরিসংখ্যান বিভাগের কক্ষ ব্যবহার করা হয়।

এদিকে গণিত বিভাগের দুটি ক্লাসরুমে মাস্টার্সের দুটি ব্যাচসহ মোট ছয়টি ব্যাচের পরীক্ষা নেয়া হয়। এ বিভাগে সব কটি ব্যাচের সমন্বয় করে পরীক্ষা নিলেও পরিসংখ্যান ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষা নিতে সমস্যা হচ্ছে। এমনকি ক্লাসরুমের অভাবে নেয়া যাচ্ছে না পরীক্ষাও।

গত ৭ অক্টোবর থেকে জবিতে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হলেও এখন পর্যন্ত এই বিভাগগুলোকে ক্লাসরুম বরাদ্দ দেয়া হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিসংখ্যান বিভাগের এক শিক্ষার্থী নিউজবাংলাকে জানান, ‘আমাদের ব্যাচের সব বিভাগের বন্ধুদের দুটি সেমিস্টারের পরীক্ষাই প্রায় শেষ। এদিকে সবার একসঙ্গে পরীক্ষা শুরু হলেও আমাদের বিভাগ থেকে জানিয়েছে পরের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা জানুয়ারিতে শুরু হবে। এতে আমাদের একটা সেশনজটের আশঙ্কা রয়েছে। অতিদ্রুত আমাদের জন্য ক্লাসরুম বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীও তাদের বিভাগের ক্লাসরুম সংকটের কথা জানান। বিভাগে পাঁচটি ব্যাচের বিপরীতে ক্লাসরুম রয়েছে একটি, আর ল্যাব রয়েছে দুটি।

পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের একটা ক্লাসরুম। পাশের ডিপার্টমেন্টগুলোর রুম ধার করে পরীক্ষা নিচ্ছি। আমাদের রফিক ভবনের যে রুমগুলো ছিল, সেগুলো মেডিক্যাল সেন্টার স্থাপনের সময় নিয়ে নিয়েছে।’

তাদের রুমগুলো নিলেও বিভাগকে জানানো হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। তবে পুরো বিভাগ স্থানান্তর করা হবে বলে প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে বলে জানান তিনি।

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘রফিক ভবনের নিচে আমাদের বিভাগের জন্য বরাদ্দকৃত কক্ষ দুটি যখন নেয়া হয় তখন সাবেক উপাচার্য বলেছিলেন যে আমাদের নতুন ভবনে (নিউ একাডেমিক ভবন) শিগগিরই ক্লাসরুম দেয়া হবে। এরপর আমাদের নতুন উপাচার্য এলে আমরা তার কাছে বিষয়টি জানালে উনি একটি কমিটি করে দেন, যে আলোচনা করে কোথায় রুম দিলে ভালো হয়।’

দ্রুতই তাদেরও কক্ষ বরাদ্দ দেয়ার কথা জানান তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী নিউজবাংলাকে জানান, ‘আমরা পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সার্ভে করেছি। কোন বিভাগের অধীনে কতটুকু জায়গা আছে। সার্ভের রিপোর্ট পাওয়ার পর বলা যাবে যে কার কতোটুকু প্রয়োজন বা কোনো বিভাগের কোনো চাহিদা আছে কি না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগের ক্লাসরুম ও কক্ষ বরাদ্দ দেয়ার জন্য রয়েছে ‘স্পেস বরাদ্দ কমিটি’। কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ এবং সদস্যসচিব প্রকৌশল দপ্তরের উপপ্রধান প্রকৌশলী (সিভিল) মো. আমিরুল ইসলাম।

এ ছাড়া কলা, আইন ও বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন এবং রসায়ন, উদ্ভিদবিজ্ঞান ও সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যানও এই কমিটির সদস্য।

কমিটির সদস্যসচিব প্রকৌশল দপ্তরের উপপ্রধান প্রকৌশলী (সিভিল) মো. আমিরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, তাদের স্পেস বরাদ্দ কমিটির পরবর্তী সভায় রফিক ভবনের নিচতলায় সে চারটি বিভাগের ক্লাসরুম ছিল, তাদের কক্ষ দেয়ার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়া হবে।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কিছু কিছু ডিপার্টমেন্ট ছাড়া সব ডিপার্টমেন্টেই জায়গা সংকট আছে। আমি দায়িত্ব নেয়ার পরই একটি স্পেস বরাদ্দ কমিটি করে দিই৷ সেখানে ট্রেজারার আছেন, ডিন আছেন, চেয়ারম্যান আছেন, শিক্ষক সমিতির প্রতিনিধি আছেন, প্রকৌশল দপ্তরও আছে। তারা কাজ করছে। এদের রিপোর্ট পাওয়ার পরে আমরা কাজ শুরু করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘কক্ষ সংকটের জন্য পরীক্ষা পেছাবে না। আমি বলে দিয়েছি সবাই সবারটা শেয়ার করবে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা। এটা শুধু এক ডিপার্টমেন্টের জায়গা না।’

এ বিভাগের আরো খবর