বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নালায় শিশু নিখোঁজ, এবার কাউকে দুষছেন না মেয়র

  •    
  • ৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ২২:২৭

মেয়র বলেন, ‘ওরা বোতল দেখে লাফ দিয়ে নামছে। ওরা কয়েকটা বোতল কুড়িয়ে নিয়েছে। কামাল খেলনা নিতে গিয়ে ডুবে গেছে, ও পড়ে যায়নি। বোতল কুড়াতে গিয়ে, খেলনা কুড়াতে গিয়ে এই দুর্ঘটনাটা ঘটেছে।’

চট্টগ্রাম নগরীর ষোল শহর এলাকায় নালায় পড়ে শিশু নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় এবার আর কাউকে দায়ী করতে চান না সিটি মেয়র রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘এই দুর্ঘটনায় আমি কাউকে দায়ী করব না, কারণ ওই ছেলে সেখানে খেলনা কুড়াতে গেছে। নিজেই ওখানে নেমেছে।’

মঙ্গলবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

ওই শিশু নালায় পড়ে যায়নি, বরং খেলনা কুড়াতে নেমেছিল দাবি করে মেয়র বলেন, ‘ওরা বোতল দেখে লাফ দিয়ে নামছে। ওরা কয়েকটা বোতল কুড়িয়ে নিয়েছে। যে ছেলেটা আছে সে বলতেছে, আমি পানির মধ্যে সাঁতরিয়ে এখানে আসছি, ওই ছেলেটা (কামাল) নাকি ওর মতো করে খেলনা নিতে চাইছে। নিতে চাওয়ার পরে সে ডুবে গেছে। আর আপনারা যে বলছেন ও পড়ে গেছে, ও পড়ে যায়নি। বোতল কুড়াতে গিয়ে, ও খেলনা কুড়াতে গিয়ে এই দুর্ঘটনাটা ঘটেছে।’

নালায় স্ল্যাব নেই কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ চলছে। তো এখানে নালার উপর কীভাবে স্ল্যাব দিব বলেন? এখানে কাজ অলরেডি চলছে, এখানে তো স্ল্যাব দেয়ার প্রশ্নই আসে না। আমাদের যেসব নালায় কাজ চলছে না, আমরা সেসব নালায় স্ল্যাব বসাচ্ছি। স্ল্যাভগুলো তৈরি করে কিউরিং করতেও ১৫ দিন সময় লাগে।’

মেয়র বলেন, ‘আপনারা দেখেন, আগে নালা ভাঙা ছিল, স্ল্যাব উঠানো ছিল। আমরা প্রায় ফুটপাতে অলরেডি স্ল্যাব দিয়ে দিয়েছি। যেসব নালায় কাজ চলছে না, সেসব নালায় জানুয়ারির মধ্যে স্ল্যাব দেব। অনেকগুলো নালা আছে স্ল্যাব দেয়ার উপযোগী না, স্ল্যাব দেয়া সম্ভবও না। যেমন এই নালায়, এখানে তো স্ল্যাব দেয়া যাবে না। এখানে যা করা যায়, কাজ শেষ হলে বেরিয়ার দেয়া যায়।’

উন্মুক্ত নালা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের, এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রেজাউল করিম বলেন, ‘না, এটাতো মেগা প্রকল্পে জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ চলছে, সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড বাস্তবায়ন করছে। কাজটা তো শেষ হয় নাই, আপনারা তো দেখছেনই। চলমান রয়েছে কাজ, ওদের ইনস্ট্রুমেন্ট, মাটি সব পাড়ে পাড়ে আছে।’

যখন ঠিকাদার কোনো কনস্ট্রাকশনের কাজ করে, তখন তাদের জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা। এ ক্ষেত্রে কারো কোনো ব্যর্থতা বা সমন্বয়হীনতা রয়েছে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘না, আপনার সাথে এটা আমি দ্বিমত করবো না। স্বাভাবিকভাবে, শুধু নালা-নর্দমায় নয়, রাস্তায় যদি একটা গর্তও হয়, সেখানে কাজ করার সময় একটা নিরাপত্তা বলয় দিয়ে দিতে হয়, যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। এটা অবশ্যই ঠিক কথা, কাজ চলমান অবস্থায় জননিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এগুলো দেয়া উচিত।’

জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে যারা কাজ করছে, তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ‘সমন্বয় অবশ্যই আছে। আমরা সমন্বয় করে, আলাপ আলোচনা করে কাজ করছি। যেহেতু এটা বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনী, তাদের সঙ্গে আমাদের সমন্বয় আছে, আলাপ আলোচনা আছে। কাজগুলো শেষ না হওয়া পর্যন্ত করপোরেশন এখানে কিছু করতে পারতেছে না।’

চট্টগ্রাম নগরীর ষোল শহরে সোমবার বিকেল ৪টার দিকে মো. কামাল নামের এক শিশু নালায় পড়ে নিখোঁজ হয়। শিশুটি ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয় বলে জানা গেছে। এখনও তার অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি। ঘটনাটি ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হয়েছে একদিন পর।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, সোমবার বিকেল ৪টার দিকে মো. কামাল নামের ওই শিশু নালায় পড়ে গেলেও তারা খবর পেয়েছে মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিকেলে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। আমাদের টিম ওই শিশুকে খোঁজাখুঁজি করছে। কিন্তু তাকে এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। একটি ডুবুরি দলও কাজ করছে।’

চট্টগ্রামে উন্মুক্ত নালা ও খালে পড়ে গত চার মাসে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নালায় পড়ে মৃত্যুর ঘটনায় সিডিএ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে দায়ী করেছে। সবশেষ নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকায় হল-২৪ কমিউনিটি সেন্টারের বিপরীত পাশে গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নালায় পড়ে ইয়াসির আরাফাত নামের এক কলেজছাত্রের পা ভেঙেছে।

নালায় পড়ে সাদিয়ার মৃত্যুতে মেয়র দুষেছিলেনন সিডিএকে

চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে নালায় পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী শেহেরীন মাহমুদ সাদিয়ার মৃত্যুর জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অবহেলাকে দায়ী করছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।

সাদিয়া যেখানে নালায় পড়ে যান সেই আগ্রাবাদের মাজার গেট এলাকা ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টার দিকে পরিদর্শন শেষে এই অভিযোগ করেন তিনি।

মেয়র বলেছিলেন, ‘অবহেলার জন্য, অসতর্কতার জন্য এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে। নালার পাশে ফেন্সিং (নিরাপত্তা বেষ্টনি) থাকলে এ রকম দুর্ঘটনা ঘটত না। সিটি করপোরেশনের রেলিং ছিল নালার ওপরে। নালায় স্ল্যাবও ছিল, তবে সিডিএ কাজ করতে গিয়ে নষ্ট করে ফেলছে। কিন্তু পরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়নি। তাই এ দুর্ঘটনা ঘটছে।’

মেয়র তখন বলেছিলেন, ‘যে কোনো উন্নয়ন কাজ করতে গেলে মানুষের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করতে হবে। সিডিএর কাজের কারণে সব ময়লা গিয়ে নালায় পড়ছে। তাই নালায় ময়লা জমে ছিল।’

তার ভাষ্য, ‘চট্টগ্রামের দেওয়ানহাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ করছে সিডিএ। এগুলো সিটি করপোরেশনের আওতায় নেই। তাই কাজের সময় সবকিছু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের।

‘যেসব সংস্থা উন্নয়ন কাজ করছে তাদের উচিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া। মানুষের জন্যই তো উন্নয়ন। মানুষকে রক্ষা করতে না পারলে উন্নয়ন কীভাবে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর