স্যানিটারি প্যাড কিনতে গিয়ে দেশে অনেক সময়ই মেয়েরা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন। বখাটেদের নিপীড়নের শিকারও হন অনেকে।
সেই সমস্যা সমাধানে ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক দল শিক্ষার্থী তৈরি করেছেন স্যানিটারি প্যাডের ভেন্ডিং মেশিন।
সাত সদস্যের দলটির তৈরি মেশিনটি এরই মধ্যে ‘বেসিস ন্যাশনাল আইসিটি’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। এ ছাড়া ‘ইন্টারন্যাশনাল এপিআইসিটিএ অ্যাওয়ার্ড’ প্রতিযোগিতায় চীন, হংকং, জাপান, সিঙ্গাপুর, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের ১৫টি দেশের প্রকল্পের মধ্যে ১০ নম্বরে রয়েছে।
ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা এর আগে ‘অটোমেটিক হাউস ক্লিনার অ্যান্ড লাইফ সেফটি রোবট’ ও কৃষিভিত্তিক রোবট ‘স্মার্ট এগ্রো রোবট’ তৈরি করে আলোচনায় আসেন।
মেশিন তৈরির দলপ্রধান হৃদয় হোসেন বলেন, ‘আমাদের দেশের মেয়েরা প্রায়ই দোকান থেকে স্যানেটারি প্যাড কিনতে গিয়ে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ে। অনেক সময় বখাটেরা তাদের মানসিক ও শারীরিক নিপীড়ন করেন। এতে দোকান থেকে প্যাড কিনতে অনেকে দ্বিধাবোধ করেন।’
তিনি আরও বলেন, “এ কারণে অনেক মেয়ে স্যানেটারি প্যাড ব্যবহার করে না। এর ফলে মেয়েদের নানা ধরনের সমস্যাসহ ইনফেকশনের মতো সমস্যায়ও ভুগতে হয়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা তৈরি করেছি ‘আইওটি বেসড স্মার্ট ভেন্ডিং মেশিন ফর সেনেটারি প্যাড।
“এই মেশিনের সাহায্যে একজন মেয়ে খুব সহজেই তার প্রয়োজন অনুযায়ী প্যাড সংগ্রহ করতে পারবেন। প্যাড সংগ্রহ করার জন্য গ্রাহককে তার কাছের মেশিনের ভেতর ১০ টাকা দিতে হবে, যার বিনিময়ে তিনি খুব সহজে একটি স্যানিটারি প্যাড পেয়ে যাবেন।”
দলের সদস্য শারমিন আক্তার তন্নি বলেন, ‘মেশিনের মধ্যে প্যাড ফুরিয়ে গেলে মেশিন ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে আমাদের জানিয়ে দিবে। তখন নিয়ন্ত্রনকারী ফের মেশিনে প্যাড দিয়ে আসবে। এতে দোকানি বা ব্যবহারকারী কাউকে বাড়তি সময় দিতে হবে না।’
দলের আরেক সদস্য বক্তিয়ার আহম্মেদ বাপ্পি বলেন, ‘একটি মেয়ে খুব সহজে নিজস্ব মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে মেশিন কোন কোন লোকেশনে আছে তা দেখতে পাবে। মেশিনের গায়ে সাটানো কোড স্ক্যান করে বিকাশ বা নগদের মাধ্যমে দাম পরিশোধ করেও প্যাড কিনতে পারবে।’
ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী সাজেদ-উর-রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ‘আইওটি বেসড স্মার্ট ভেন্ডিং মেশিন ফর সেনেটারি প্যাড’ উদ্ভাবনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে সব প্রকার সহযোগিতা করা হয়েছে। তাদের যখন যেটা প্রয়োজন, আমরা সরবরাহ করার চেষ্টা করেছি। আমরা প্রজেক্টটির সফলতা কামনা করি।