সারা বিশ্বে দ্রুত বর্ধনশীল জনসংখ্যার জন্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করতে জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণ দেয়ার পাশাপাশি বিশ্ব সম্প্রদায়কে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাপানের রাজধানী টোকিওতে অনুষ্ঠিত ‘নিউট্রিশন ফর গ্রোথ সামিট ২০২১’-এ অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার বিকেলে গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করতে পুষ্টি সম্মেলনে পাঁচটি প্রস্তাব রাখেন শেখ হাসিনা।
প্রস্তাবগুলোর মধ্যে আছে
# পুষ্টি অর্জনে নেতিবাচক প্রভাবসহ কোভিড-১৯-এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
# উচ্চফলনশীল ও পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে উচ্চ গবেষণায় সহযোগিতা বাড়াতে হবে।
# জরুরি দুর্যোগ থেকে নিজেদের নিরাপদ রাখতে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক খাদ্য ব্যাংক গড়ে তুলতে হবে।
# খাদ্যে পুষ্টি উপাদান বাড়াতে সর্বোত্তম অনুশীলন এবং দক্ষতা বিনিময় প্রয়োজন।
# জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় খাপ খাইয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জলবায়ু অভিযোজন তহবিল ছাড় দেয়া।
জলবায়ু সংকট উন্নয়নশীল বিশ্বে খাদ্য উৎপাদনকে বাধাগ্রস্ত করে বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ ঘোষিত পুষ্টি দশকের অর্ধেক পথ পাড়ি দিয়েছি আমরা। তাই সব ধরনের অপুষ্টির অবসান ঘটাতে বিশ্বজুড়ে অংশীদারত্ব গড়ে তোলার দৃঢ় অঙ্গীকারের সময় এসেছে।’
পুষ্টি ঘাটতি কমাতে সরকারের নেয়া উদ্যোগে চলমান কোভিড-১৯ মহামারি বড় ধরনের ধাক্কা দিয়েছে বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টিতে প্রভাবসহ কোভিড-১৯-এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ এবং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।’
সব নাগরিকের জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করাকে কঠিন কাজ মনে করলেও প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তবে টেকসই উন্নয়নের পথে পুষ্টি নিরাপত্তায় বিনিয়োগ আর্থসামাজিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করে।’
প্রধানমন্ত্রী জানান, গত এক দশকে অর্থনীতি, খাদ্যনিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টিতে ব্যাপক সাফল্য এবং উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ‘সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে আমরা অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় ভঙ্গুর জনগোষ্ঠীর জন্য ভাতা চালু করা হয়েছে। অসচ্ছল গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের নগদ ভাতা দেয়া হয়।
‘স্কুলশিক্ষার্থীদের জন্য মিড-ডে মিল চালু করা হয়েছে। খাদ্যনিরাপত্তা এবং উন্নত পুষ্টির লক্ষ্যে শস্য, শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম এবং ফলের উৎপাদন বহুমুখী করছি।’
সরকারের নেয়া উদ্যোগগুলোর সুফল দেশের মানুষ পেতে শুরু করেছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘গত এক দশকে দারিদ্র্যের হার ৩১.৫ শতাংশ থেকে ২০.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। শিশু পুষ্টির চাহিদা অর্জনের পথে রয়েছি আমরা। কমেছে অপুষ্টির হারও।’