তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রিত্ব হারাতে বসা মুরাদ হাসানকে জেলা আওয়ামী লীগের পদ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক।
নেতারা বলছেন, নারীর প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য ও ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর মুরাদকে মন্ত্রিসভা থেকে বিদায় নিতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবারের সভা থেকে তাকে জেলা আওয়ামী লীগের পদ থেকে বহিষ্কারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কেন্দ্রে পাঠানো হবে।
জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাকী বিল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজকে বিকেলে আমাদের মিটিং আছে। সেখানে তার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করা হবে।’
সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহম্মেদ চৌধুরী বলেন, ‘মুরাদ হাসানের আচরণ লজ্জাজনক ও দুঃখজনক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের যে নির্দেশ দিয়েছেন তাতে সবাই একমত পোষণ করেছি। কারণ দ্বায়িত্বশীল পদে থেকে এমন বক্তব্য কেউ বলতে পারে না।’
গত ১ ডিসেম্বর রাতে ‘অসুস্থ খালেদা, বিকৃত বিএনপির নেতাকর্মী’ শিরোনামে এক ফেসবুক লাইভে যুক্ত হন মুরাদ হাসান। সেখানে বিএনপির রাজনীতি সমালোচনার একপর্যায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ও দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে তিনি বিভিন্ন অশালীন মন্তব্য করেন।
এ সময় আফ্রিকান-আমেরিকান জনগোষ্ঠীর প্রতি বিদ্বেষমূলক মন্তব্যও ছিল মুরাদের কণ্ঠে।
এই লাইভ নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যেই ফেসবুকে একটি টেলিফোনালাপ ভাইরাল হয়। বলা হচ্ছে, এটি মুরাদের। সেখানে শোনা যায়, তিনি একজনকে ফোন করে এক চিত্রনায়িকাকে তার কাছে যেতে বলেন। এই কথোপকথনে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তা নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়।
এরপর সোমবার রাতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, মঙ্গলবারের মধ্যে তাকে প্রতিমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগপত্র দেন মুরাদ।
মুরাদের নির্বাচনি আসন সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাদশা বলেন, ‘এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে একজন তথ্য প্রতিমন্ত্রী যেভাবে অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেছেন তা সত্যিই লজ্জাজনক। প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এটা অবশ্যই প্রশংসনীয়। এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আনন্দ মিছিল করেছেন।’
উপজেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে পৌর এলাকায় মঙ্গলবার সকালে সরিষাবাড়ীতে মুরাদের কুশপুতুল পোড়ানো হয়। একই সময়ে শত শত নেতা-কর্মী নিয়ে আলাদা মিছিল বের করেন পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম।