প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের পদত্যাগের খবরে তার নির্বাচনি এলাকা জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে মঙ্গলবারও আনন্দ মিছিল হয়েছে। পোড়ানো হয়েছে তার কুশপুতুল।
উপজেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে পৌর এলাকায় এদিন সকালে মিছিল করা হয়। পরে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে হয় সংক্ষিপ্ত সভা। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা মুরাদের কুশপুতুল দাহ করেন।
মিছিলে নেতৃত্ব দেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল আমিন হোসাইন।
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মিষ্টি বিতরণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে খুশি হয়েছে সবাই।’
একই সময়ে আলাদা মিছিল বের করেন পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম। তিনি শত শত নেতা-কর্মী নিয়ে পৌর এলাকা শিমলা বাজার থেকে আনন্দ মিছিল বের করেন। মিছিলটি আরডিএম স্কুল রোড ও বাস টার্মিনাল সড়ক ঘুরে বঙ্গবন্ধু চত্বরে আলোচনা সভার মাধ্যমে শেষ হয়।
নারীর প্রতি ‘অবমাননাকর’ ও ‘বর্ণবাদী’ মন্তব্য করে আগে থেকেই তীব্র সমালোচনার মধ্যে ছিলেন মুরাদ। এর মধ্যে ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপে এক চিত্রনায়িকাকে ধর্ষণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবারের মধ্যে তাকে প্রতিমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সাংবাদিকদের সোমবার রাতে তিনি বলেন, ‘আজ সন্ধ্যায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে এবং আমি আজ রাত ৮টায় প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে বার্তাটি পৌঁছে দিই।’
মুরাদের একান্ত সচিব (রাজনৈতিক) জাহিদ নাঈম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিনি (মুরাদ) পদত্যাগ করবেন শুনেছি। তবে তার সঙ্গে আমার সরাসরি কথা হয়নি। তাই বলতে পারছি না কখন পদত্যাগ করবেন।’
প্রতিমন্ত্রী রোববার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললেও সোমবার দিনভর নিজেকে আড়াল করে রাখেন। রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে তার যোগ দেয়ার কথা থাকলেও তিনি সেখানে যাননি।
তিন দিন আগে একটি অনলাইন টকশোয় এসে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য দেন।
এ নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যেই ফেসবুকে একটি ফোনালাপ ভাইরাল হয়। বলা হচ্ছে, এটি মুরাদের। সেখানে শোনা যায়, তিনি একজনকে ফোন করে এক চিত্রনায়িকাকে তার কাছে যেতে বলেন। এই কথোপকথনে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তা নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়।
মুরাদ জামালপুরের সরিষাবাড়ী থেকে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে তার আসনটি জোটের শরিক জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে একাদশ সংসদ নির্বাচনে আবার তাকে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ।
নির্বাচনের পর মুরাদকে প্রথমে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী করা হয়। একটি বেসরকারি হাসপাতালে আচরণ নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর তাকে তথ্য প্রতিমন্ত্রী করা হয়।