অনলাইনে বিতর্কিত বক্তব্যের কারণে তুমুল সমালোচনার মধ্যে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পাওয়ার পর ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যান মুরাদ হাসান। সেখানে পাঁচতারকা হোটেলে রেডিসন ব্লু বে ভিউতে তিনি অবস্থান করেন।
নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হোটেলটির জনসংযোগ কর্মকর্তা রাফাত সালমান।
তিনি বলেন, ‘ওনার জন্য একটা রুম বুকড ছিল। উনি সোমবার দুপুরের পর হোটেলে আসেন। এদিন বিকেলে আবার বের হয়েছেন হয়তো। আবার হোটেলে এসে মধ্যেরাতে হোটেল ছেড়েছেন।’
এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে কোনো রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ছিল না বলে জানান তিনি।
নিউজবাংলা জানতে পেরেছে, রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে মুরাদ হাসান সোমবার বেলা ১১টার দিকে বের হন। ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও ফেরেননি।
ধানমন্ডি ১৫ নম্বর সড়কে মুরাদের বাসায় গিয়ে মঙ্গলবার এ তথ্য জানা গেছে। বাড়ির নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্য ও সিকিউরিটি গার্ডরা জানান, বাসা থেকে বের হওয়ার পর এক দিন পেরিয়ে গেলেও ফেরেননি তথ্য প্রতিমন্ত্রী।
সিকিউরিটি গার্ডরা জানান, বাড়ির চতুর্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে এক বছর ধরে বসবাস করছেন মুরাদ। একই ভবনের দ্বিতীয় তলায় তার অফিস।
সিকিউরিটি গার্ড সুমন বলেন, ‘স্যার কালকে বের হইছেন, এরপর আর আসেন নাই। কোথায় গেছেন জানি না।’
একই কথা জানান বাড়িতে থাকা পুলিশের একজন সদস্য। তিনি বলেন, ‘রোববার রাতে বাসায় আসেন মুরাদ হাসান। সোমবার বেলা ১১টার দিকে বের হয়েছেন। এখনও ফেরেননি।’
নারীর প্রতি ‘অবমাননাকর’ ও ‘বর্ণবাদী’ মন্তব্য করে আগে থেকেই তীব্র সমালোচনার মধ্যে ছিলেন মুরাদ। এর মধ্যে ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপে এক চিত্রনায়িকাকে ধর্ষণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবারের মধ্যে তাকে প্রতিমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সাংবাদিকদের সোমবার রাতে তিনি বলেন, ‘আজ সন্ধ্যায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে এবং আমি আজ রাত ৮টায় প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে বার্তাটি পৌঁছে দিই।’
মুরাদের একান্ত সচিব (রাজনৈতিক) জাহিদ নাঈম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিনি (মুরাদ) পদত্যাগ করবেন শুনেছি। তবে তার সঙ্গে আমার সরাসরি কথা হয়নি। তাই বলতে পারছি না কখন পদত্যাগ করবেন।’
প্রতিমন্ত্রী রোববার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললেও সোমবার দিনভর নিজেকে আড়াল করে রাখেন। রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে তার যোগ দেয়ার কথা থাকলেও তিনি সেখানে যাননি।
তিন দিন আগে একটি অনলাইন টকশোয় এসে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য দেন।
এ নিয়ে তুমুল আলোচনার মধ্যেই ফেসবুকে একটি ফোনালাপ ভাইরাল হয়। বলা হচ্ছে, এটি মুরাদের। সেখানে শোনা যায়, তিনি একজনকে ফোন করে এক চিত্রনায়িকাকে তার কাছে যেতে বলেন। এই কথোপকথনে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তা নিয়ে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়।