ঘুর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে গত শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত ঝিনাইদহে বৃষ্টি হয়েছে। তিন দিনের টানা এ বৃষ্টির কারণে জেলার ৬ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ফসলের মাঠে পানি জমে গেছে, তলিয়ে গেছে জমির পাকা ধান। আর যেসব জমির ধান কাটা হয়েছে তাও ঘরে তুলতে পারেননি কৃষকরা। পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফলন যেমন কম হওয়ার আশংকা করছেন, তেমনি উৎপাদন খরচ উঠবে কিনা তা নিয়েও চিন্তিত তারা।
সদর উপজেলার ডেফলবাড়িয়া গ্রামের কৃষক জহির রায়হান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাগের মাঠের প্রায় সব ধান পানিতে তলায়ে আছে। কেউ কেউ ধান কাটে জমিতে গাদি মারে রেখে দিয়েছে সেই ধানউ ডুবে রইছে। ইবারের বৃষ্টিতে ম্যালা ক্ষতি হয়ে গেল।’
একই গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এর আগের বৃষ্টিতে ক্ষতি হইছে। সিবার একটু কম হইছিল। কিন্তু ইবার একদম শ্যাষ করে দিল। মাঠের ধান এখনও কাটাও হয়নি। যা কাটা হইছে মাঠেই পড়ে আছে। কি করব এখন বুঝতি পারছিনে।’
সদর উপজেলার বিষয়খালী গ্রামের কৃষক নবিছদ্দিন বলেন, ‘বৃষ্টিতি ধান তো গ্যালোই, সাথে বিচেলিগুলো নষ্ট হয়ে গেল। ধান বিক্রি করে কিছুটা লাভ থাকে। আর বিচেলিগুলো বিক্রি করতি পারলি লাভ একটু ভালো হয়। এখন বিচেলিগুলো পচে যাচ্ছে। আর ধান গজায়ে যাচ্ছে। পানি কবে শুকোবি আর কবে ধান আনতি পারবো সেই নিয়েই চিন্তাই আছি।’
নিউজবাংলাকে এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আজগর আলী বলেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে বৃষ্টিতে জেলার ৬ উপজেলায় ২ হাজার ৩৯২ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা কৃষক ভাইদের পরামর্শ দিচ্ছি ধান যেন দ্রুত পানি থেকে তুলে আইল বা শুকনো স্থানে তুলে মাড়াই করে ঘরে তুলে ফেলেন।
‘উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। যদি মন্ত্রণালয় থেকে ক্ষতিপূরণ আসে তবে দ্রুত তা কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে।’