মাথাপিছু জাতীয় আয়, গড় আয়ু, জিডিপির প্রবৃদ্ধিসহ আর্থসামাজিক অনেক সূচকে পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। অথচ স্বাধীনতার সময় এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে ছিল।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এই সম্মেলনের আয়োজন করে সিপিডি। চার দিনব্যাপী ভার্চুয়ালি এ সম্মেলন সোমবার শুরু হয়েছে।
‘৫০ বছরে বাংলাদেশ: প্রত্যাবর্তন ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রবীণ এই অর্থনীতিবিদ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক রওনক জাহান। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
রেহমান সোবহান বলেন, ‘স্বাধীনতার সময় ১৯৭২ সালে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দারিদ্য, মাথাপিছু আয়সহ অনেক সূচকে আমরা পাকিস্তানের তুলনায় পিছিয়ে ছিলাম।
‘পরবর্তী ৫০ বছরে সেই অবস্থান থেকে অনেক এগিয়েছে বাংলাদেশ। এ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে গত ২৫ বছরে। তবে লক্ষণীয় অগ্রগতি হয়েছে গত দশকে।’
১৯৭২ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় পাকিস্তানের চেয়ে ৬১ শতাংশ কম ছিল। জিডিপির উচ্চ প্রবৃদ্ধির কারণে মাথাপিছু আয় বাড়তে থাকে এবং ২০২০ সালে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে ৬২ শতাংশ বেশি হয়েছে মাথাপিছু আয়।
শুধু তা নয়, এই সময়ে সঞ্চয়, বিনিয়োগ এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে টপকে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। এর ফলে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পাকিস্তানের চেয়ে দ্বিগুণ হয়েছে।
রেহমান সোবহান বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন আর বৈদেশিক সাহায্যনির্ভর দেশ নয়। যে পরিমাণ বিদেশি ঋণ আমরা পাচ্ছি, তা জিডিপির ২ শতাংশ। অথচ পাকিস্তান এখনও বিদেশি সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।’
বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বলে জানান রেহমান সোবহান।
বলেন, ‘১৯৭২ সালে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদনে পিছিয়ে ছিলাম। দ্রুত বিদ্যুৎ খাতের প্রসার ঘটায় গত ১০ বছরে পাকিস্তানের চেয়ে দ্বিগুণ উৎপাদন বেড়েছে।
মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ পিছিয়ে ছিল। বর্তমানে এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণেও পাকিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। স্বাস্থ্যসেবা উন্নীতির ফলে আমাদের গড় আয়ু ও পাকিস্তানের তুলনায় ভালো অবস্থানে আছে বলে জানান রেহমান সোবহান।