ফাস্টফুড, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও হতাশাজনক জীবনযাত্রা স্থূলতা (ওবিসিটি) বাড়াচ্ছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশেও এই সমস্যা ক্রমেই বাড়ছে।
সোমবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ষষ্ঠ আন্তর্জাতিক স্লিপ অ্যাপনিয়া শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি (বিএমএ) অধ্যাপক ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত, অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোসাররফ হোসেন ও অধ্যাপক ডা. আবুল হাসনাত জোয়ারদার।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সবকিছু মিলে স্থূলতা সমস্যা সারা বিশ্বেই মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। ওবিসিটি বাড়ার অন্যতম কারণ আমাদের অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও কায়িক পরিশ্রম কমে আসা।
‘শিশুদের মধ্যে স্থূলতার হার বেড়ে চলেছে। সঠিক সময়ে খেলাধুলা করতে না পেরে বড়দের মতো শিশুরাও এই সমস্যায় ভুগছে। শিশুদের জন্য উন্মুক্ত খেলার মাঠ নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের খেলাধুলার ব্যবস্থা করতে হবে।
নাক ডাকার ক্ষেত্রে ওবিসিটি একটি কারণ উল্লেখ করেন দীপু মনি বলেন, ‘নাক ডাকা বিষয়ে অনেক গবেষণা দরকার। এ বিষয়ে আমাদের সচেতনতারও প্রয়োজন রয়েছে। নাক ডাকা যে অসুস্থতা, এটা অনেকেই জানেন না। নাক ডাকার যে ভালো চিকিৎসা রয়েছে, সেটাও অনেকের অজানা। এ বিষয়ে আমাদের যথেষ্ট সচেতনতা তৈরির প্রয়োজন রয়েছে।
‘ঘুমের বিষয়টি জরুরি। খাবার ছাড়া একটা মানুষ ৬৬ দিন বাঁচতে পারে, আর ঘুম ছাড়া বাঁচতে পারে মাত্র ১১ দিন- এমন একটি গবেষণা রয়েছে। না ঘুমালে মস্তিষ্ক কাজ করে না।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাক-কান-গলা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান তফাদার বলেন, ‘ঘুমের মধ্যে নাক ডাকার ফলে মানুষের ঘুম নষ্ট হয়। সারা দিনের কাজে কর্মস্পৃহা থাকে না। বিশেষ করে গাড়িচালকরা যদি ওবিসিটি সমস্যায় ভোগেন, তা হলে সড়ক দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
‘দেশে যত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে সেগুলোর অধিকাংশই ঘটে থাকে চালকের স্লিপ অ্যাপেনিয়ার কারণে। এই কনফারেন্সের মাধ্যমে আমরা সব চালকের স্লিপ অ্যাপেনিয়া স্টাডি (পরীক্ষা) আইন করে বাধ্যতামূলক করার আহ্বান জানাচ্ছি।
‘পাশাপাশি এটাও স্মরণে রাখতে হবে, কারও মধ্যে নাক ডাকার সমস্যা দেখা দিলেই তা বন্ধের পিল বা ঘুমের ওষুধ খাওয়া যাবে না। নাক ডাকা বন্ধে কবিরাজি চিকিৎসার মতো কুসংস্কারও রয়েছে। এটা বন্ধ করতে হবে।’