পুলিশ ভেরিফিকেশনকে অনেকে উটকো ঝামেলা মনে করেন। এ নিয়ে নানা বিড়ম্বনাও সহ্য করতে হয়। কিন্তু সেই সনাতন ধারণা পাল্টে দিচ্ছে নেত্রকোণার পুলিশ।
চাকরি প্রার্থীদের ভেরিফিকেশন করতে রীতিমতো ফুল নিয়ে বাড়িতে হাজির হচ্ছেন তারা। আর তা দেখে রীতিমতো অবাক হচ্ছেন চাকরি প্রার্থীরা।
সম্প্রতি পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নেত্রকোণার ১০ উপজেলার ৪৭ জনকে বাছাই করা হয়। এখন তাদের পুলিশ ভেরিফিকেশন চলছে। আর ভেরিফিকেশন করতে তাদের বাড়িতে ফুল নিয়ে হাজির হচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা।
সোমবার বিকেলে সদর উপজেলার মদনপুর গ্রামের আফরোজা আক্তারের তথ্য ভেরিফিকেশন করতে যান নেত্রকোণা মডেল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) নাজমুল হুদা ও আরও কয়েক পুলিশ সদস্য।বাড়িতে পৌঁছেই তারা আফরোজার হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন। কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন আফরোজা।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আফরোজা বলেন, ‘পুলিশ ভেরিফিকেশনকে আমরা খুব ঝামেলার বিষয় বলেই জানি। কিন্তু ধারণাটা পাল্টে গেল। ফুল হাতে নিয়েও প্রথমে বুঝতে পারিনি- তারা ভেরিফিকেশনে এসেছেন।’
পুলিশের এমন ব্যবহারে অত্যন্ত সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আফরোজার বাবা সবুজ মিয়াও।
আফরোজার মতো একই গ্রামের সোহাগ মিয়ার বাড়িতেও যান ওই পুলিশ সদস্যরা। সোহাগ মিয়াও কনস্টেবল পদের নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাকেও ফুলের তোড়া উপহার দেন তারা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নেত্রকোণা মডেল থানার উপপরিদর্শক নাজমুল হুদা বলেন, ‘পুলিশ সুপার স্যার নির্দেশ দিয়েছেন, ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ায় কারও যেন বিড়ম্বনায় পড়তে না হয়। চাকরি প্রার্থীরা যেন বিষয়টাকে খুব ঝামেলার কাজ মনে না করেন, সে ধারণা থেকেই আমি তাদের বাড়িতে ফুল নিয়ে হাজির হয়েছি।
‘এতে তারা সারপ্রাইজড্ হয়েছেন এবং আমাদের খুব সহজে গ্রহণ করে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।’
‘পুলিশিং ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। পুলিশ ক্রমেই জনগণের বন্ধু হয়ে ওঠছে’- মন্তব্য করেন নাজমুল হুদা।
পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী বলেন, ‘আমরা খুব স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় ৪৭ জন কনস্টেবল বাছাই করেছি। ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়াও অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে শেষ করতে চাই। এ নিয়ে কেউ যাতে বিড়ম্বনায় না পড়েন, সে ব্যাপারে প্রতিটি পুলিশ সদস্যদের নির্দেশনা দেয়া আছে। তারা সেভাবেই মাঠে কাজ করছেন।’