বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রায়হান হত্যা মামলার সাক্ষীর ‘রহস্যজনক’ মৃত্যু

  •    
  • ৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৮:৩৭

মারা যাওয়া ছোলাই লাল নগরের কাস্টঘর এলাকার হরিজন পল্লীর বাসিন্দা। গত বছরের ১০ অক্টোবর তার ঘর থেকেই বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশ রায়হানকে ধরে নিয়ে যায়। ফাঁড়িতে নির্যাতনে পরদিন সকালে তিনি মারা যান। রায়হান হত্যায় তার স্ত্রীর করা মামলার ১২ নম্বর সাক্ষী ছোলাই।

সিলেটে রায়হান আহমেদ হত্যা মামলার এক সাক্ষীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে মামলার সাক্ষীর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে রহস্যজনক বলছেন রায়হানের মা। তার অভিযোগ, এই হত্যা মামলার আরেক সাক্ষীকে হুমকি দেয়া হচ্ছে।

রোববার রায়হান হত্যা মামলার শুনানির নির্ধারিত তারিখে সালমা বেগমই এক সাক্ষীর মৃত্যুর খবর প্রথম সংবাদ মাধ্যমকে জানান।

মারা যাওয়া ছোলাই লাল নগরের কাস্টঘর এলাকার হরিজন পল্লীর বাসিন্দা। গত বছরের ১০ অক্টোবর তার ঘর থেকেই বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশ রায়হানকে ধরে নিয়ে যায়। ফাঁড়িতে নির্যাতনে পরদিন সকালে তিনি মারা যান। রায়হান হত্যায় তার স্ত্রীর করা মামলার ১২ নম্বর সাক্ষী ছোলাই।

সিলেট কতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, গত বুধবার ছোলাই লাল নিজের ঘরে আত্মহত্যা করেন।

ওসি জানান, গত ১ ডিসেম্বর সকাল ১১টার দিকে ছোলাই লালের দেহ গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় ঝুলছে দেখতে পান তার পরিবারের সদস্যরা। তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ছোলাই লালকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি মুহাম্মদ আলী মাহমুদ আরও জানান, ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ছোলাই লালের বোন প্রতিমা বলেন, ‘ছোলাই বেশিরভাগ সময় নিজের ঘরে দরজা লাগিয়ে বসে মদ পান করতেন। ১ ডিসেম্বর সকালে অনেকক্ষণ দরজায় ডাকাডাকি করে তার সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে দেহ ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখতে পাই।’

রোববার আদালত চত্বরে সালমা বেগম বলেন, ‘রায়হানকে ছুলাই লালের ঘর থেকে সুস্থভাবে ধরে আনে পুলিশ। তাকে মারধর করে রায়হানকে ধরে আনা হয়। ছুলাই লাল হলেন প্রথম সাক্ষী। তিনি নাকি মারা গেছেন। এখন আমি শুনছি, কেউ কেউ বলছে, পুলিশও বলছে, তিনি নাকি আত্মহত্যা করেছেন। আমি সঠিক জানি না- তিনি আত্মহত্যা করেছেন, কী তাকে হত্যা করা হয়েছে। এই মৃত্যু রহস্যজনক।’

আরেক সাক্ষীকে হুমকি দেয়া হচ্ছে অভিযোগ করে সালমা বলেন, আসামিরা জেলে থাকলেও তাদের সঙ্গীরা এখনও প্রশাসনে আছেন। তারা সাক্ষীদের হুমকি দিচ্ছে।

গত বছরের ১০ অক্টোবর গভীর রাতে সিলেট শহরের আখালিয়ার এলাকার বাসিন্দা রায়হানকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে নেয়া হয়। সেখানে মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরদিন সকালে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিনি সেখানে মারা যান। এ ঘটনায় তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী হেফাজতে মৃত্যু আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।

মামলাটির তদন্তে প্রথমে পুলিশ ছিল। পরে সে বছরের ১৩ অক্টোবর মামলাটি স্থানান্তর করা হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে। চলতি বছরের ৫ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক আওলাদ হোসেন আদালতে চার্জশিট জমা দেন। এতে ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

যে ছয়জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়, তাদের পাঁচজনই পুলিশ সদস্য। তারা হলেন বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়া, এসআই হাসান উদ্দিন, এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল টিটুচন্দ্র দাস ও হারুনুর রশিদ।

অভিযুক্ত অপরজন আব্দুল্লাহ আল নোমান, যার বাড়ি কোম্পানীগঞ্জে। তার বিরুদ্ধে ঘটনার পর ভিডিও ফুটেজ গায়েব করার অভিযোগ আছে।

অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ সদস্য কারাগারে থাকলেও নোমান এখনও পলাতক আছেন।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর আদালতের বিচারক আবুল মোমেন রায়হান হত্যা মামলার চার্জশিট গ্রহণ করে নোমানের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন।

আব্দুল্লাহ আল নোমানের মালামাল ক্রোকের বিষয়ে পরোয়ানার শুনানির দিন ধার্য ছিলো রোববার। ওইদিন সিলেট অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে জারি করা ক্রোক পরোয়ানা তামিল হয়ে না আসায় পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত।

এ বিভাগের আরো খবর