বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছ থেকে দেশ ও দলীয় নেতা-কর্মীরা অনেক পেয়েছেন মন্তব্য করে তার মুক্তির আন্দোলনে শামিল হতে সবাইকে আহ্বান জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় এক সমাবেশে তিনি তিনি এই আহ্বান জানান।
মির্জা আব্বাস বলেন, ’আমরা একের পর এক কথা বলে জনমত সৃষ্টি করছি। জনমত প্রচণ্ডভাবে আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে। তার পরও আমরা কেন কিছু করতে পারব না।’
তিনি বলেন, ’আমাদের অনেক কিছু করার আছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের অনেক দিয়েছেন। তার পতাকা নিয়ে, তার নাম নিয়ে আমরা নির্বাচনে পাস করেছি। তিনি আমাদের বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছেন, পার্লামেন্ট সিস্টেম দিয়েছেন, মানুষের কথা বলার অধিকার দিয়েছেন, এই দেশের উন্নয়নের কাজ করেছেন। আমরা ব্যক্তিগতভাবে তার কাছ থেকে উপকৃত হয়েছি, এমপি-মন্ত্রী হয়েছি। এখন আমাদের দেয়ার পালা।’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে মির্জা আব্বাস বলেন, ’দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন, সুচিকিৎসার আন্দোলন দুর্বার হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগ সরকার তা সহ্য করতে পারছে না। যার কারণে আমাদের দৃষ্টিকে, আমাদের কথাবার্তাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য জিয়া পরিবারকে নিয়ে কথা বলছে। এরা আমাদের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরাতে চায়। আমাদের কথা পরিষ্কার, আমাদের দৃষ্টি একদিকে। তা হচ্ছে দেশনেত্রীর মুক্তি, সুচিকিৎসা।’
কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ’দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আপনারা অন্তরের অন্তরস্থল থেকে আবেগ নিয়ে এখানে এসেছেন। যে আবেগ প্রকাশ করেছেন, সেই আবেগকে আগুনে রূপান্তরিত করতে হবে।’
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার বর্ণনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, ’বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে আমার দুই-তিন দিন হাসপাতালে দেখা হয়েছে। হাতের ইশারায় কথা হয়েছে। উনি ভালো অবস্থায় নেই।’
তিনি বলেন, “একবার আমি বলেছিলাম, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী একজন প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর মতোই আচরণ আশা করে। কিন্তু এই আচরণটা বেগম খালেদা জিয়া পায়নি। কথা বলার পর আমার পাশ থেকে একজন বলল, ’ভাই আপনার কথা একটু কারেকশন করতে হবে। আমি বললাম সেটা কী? তিনি বললেন, ‘উনি (শেখ হাসিনা) অবৈধ প্রধানমন্ত্রী আর যে সাবেক সে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। সুতরাং আচরণ এক রকম পাবেন না।’ এ কথাটা আমার কাছে খুবই যৌক্তিক মনে হলো।”
বিএনপি চেয়ারপারসনের মামলা প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস বলেন, ’এটা কোনো মামলাই না। কথা হচ্ছে বিএনপির ওপর অত্যাচার করতে হবে, বিএনপিকে ধ্বংস করতে হবে। সুতরাং একমাত্র খালেদা জিয়াকে ধ্বংস করলে বিএনপি ধ্বংস হবে।’
বিএনপির চেয়ারপারসনের মুক্তি ও বিদেশে পাঠানোর দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে দলের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ প্রমুখ।
সমাবেশে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল বাশার আকন্দ, ত্রিশালের জয়নাল, আবু তাহের হিরন, আবদুল আজিজ, তানজিন চৌধুরী লিলি, শরিফ আহমেদ, আমিরুল ইসলাম মনি, ময়না, রিপা, রচি, মিরসরাইয়ের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নূরুল আমিন, ঢাকার আতাউর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব মো. আব্দুর রহিম, বগুড়া থেকে মোর্শেদ মিল্টন, আব্দুর রহিম, ভেড়ামারার তৌহিদুল ইসলামসহ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চাঁদপুর, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, বগুড়া, সিলেট, সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা অংশগ্রহণ করেন।