চুয়াডাঙ্গায় ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে বিষ প্রয়োগ করে শামসুল শেখ নামে এক বৃদ্ধকে হত্যার ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে।
নাতজামাই জাহিদ হাসান নন, বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে প্রেমিকের কথামতো নানাকে খুন করেছেন বলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন নাতনি কামনা খাতুন।
রোববার বিকেল ৫টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে তোলা হলে তিনি ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি দেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় কামনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডাকে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
শুক্রবার হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার গাইদঘাট থেকে কামনার কথিত প্রেমিক রাশেদ আলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন সন্ধ্যায় তাকে আদালতে তোলা হলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ‘সাবেক স্বামী হাসানের সঙ্গে বিয়েবিচ্ছেদের আগেই কামনা খাতুন বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। রাশেদের সঙ্গে সম্পর্কের কথা জেনে যান নানা শামসুল শেখ। বকাঝকাও করেন। পরে সম্পর্ক মেনে না নেয়ায় নানাকে খুন করার পরিকল্পনা করেন কামনা ও রাশেদ।’
তিনি বলেন, ‘রাশেদের বুদ্ধিতেই ঘুমন্ত নানার ঘাড়ে কীটনাশক ভর্তি ইনজেকশন পুশ করেন কামনা। নানা উঠেই রাশেদকে দেখেন। তবে হাসানের চেহারার সঙ্গে মিল থাকায় অন্ধকারে তাকেই নাতজামাই হাসান মনে করেন। তাই হাসানের নামই বলতে থাকেন।’
ওসি বলেন, বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক বাঁচাতে নিজ হাতেই নানাকে খুন করেন কামনা। দোষ চাপান সাবেক স্বামী হাসানের ওপর। এখন মামলাটি একটি নতুন মোড় নিয়েছে। আমরা রাশেদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করব।’
২৯ নভেম্বর রাতে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বেলগাছি গ্রামের শামসুল শেখকে ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে বিষ প্রয়োগ করা হয়। ওই ঘটনার পর রাত ১টার দিকে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। পরদিন সকালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
বুধবার বৃদ্ধের নাতজামাই জাহিদ হাসানকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন নিহতের ছেলে রফিকুল ইসলাম। পরে রাত ৮টার দিকে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত নাতজামাই জাহিদ হাসানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।