বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্বৈরাচার পতন দিবস আজ

  •    
  • ৬ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:১২

শহীদ নূর হোসেনের বড় ভাই আলী হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বৈরাচার পতনের পর শত দুঃখের মাঝেও আমাদের পরিবার এক ধরনের প্রাপ্তি অনুভব করেছে।’

আজ ৬ ডিসেম্বর, স্বৈরাচার পতন দিবস। গণ-আন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের এই দিনে পদত্যাগ করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। একই দিনে তিনি অস্থায়ী সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। এর মাধ্যমে অবসান হয় এরশাদের ৯ বছরের স্বৈরশাসনের। মুক্তি পায় গণতন্ত্র।

সামরিক আইন জারির মাধ্যমে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ ক্ষমতা দখল করেন তৎকালীন সেনাপ্রধান এরশাদ। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন দুই জোটসহ বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর টানা আন্দোলনের মুখে এইচ এম এরশাদ ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। বিভিন্ন দল ও সংগঠন দিনটিকে ‘স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ হিসেবে পালন করে। আর এরশাদের দল জাতীয় পার্টি পালন করে ‘সংবিধান সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে।

এরশাদের ক্ষমতা ছাড়ার তিন বছর আগে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর বুকে-পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’ স্লোগান লিখে এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমেছিলেন নূর হোসেন। সেদিন জীবন দিতে হয় তাকে।

স্বৈরাচার পতন দিবসের স্মৃতিচারণ করেন শহীদ নূর হোসেনের বড় ভাই আলী হোসেন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সেদিনের কথা মনে করলে আমাদের কাছে মনে হয় দেশ ভারমুক্ত হয়েছে। দেশে যে একটা কালো মেঘ ছিল সেটা চলে গেছে।’

‘ওইদিন ভাই হারানোর দুঃখের মাঝেও একদিক দিয়ে আমার মনে একটু স্বস্তিও ছিল। আমি ঢাকার রাস্তায় হেঁটে বেরিয়েছি। যেদিন স্বৈরাচারের পতন হয় সেদিন আমার পরিবার দুঃখের মধ্যেও এক ধরনের প্রাপ্তি অনুভব করেছে।’

আলী হোসেন বলেন, ‘নূর হোসেনের মৃত্যুর পর এরশাদ সরকারের আমলে ভাইয়ের লাশ খুঁজে বেরিয়েছি। বাবাকে সঙ্গে নিয়ে আমি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতাম। এক মাস পর্যন্ত কোথাও ভাইয়ের লাশ পেলাম না। পরে খবর পাই জুরাইন কবরস্থানের কবরখোদকদের কাছ থেকে। জানতে পারি যে সেখানে আমার ভাইকে দাফন করা হয়েছে।’

স্বৈরাচার পতন দিবসে আজকের চাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি চাই, এদেশে যেন সেরকম আর কোনো স্বৈরাচার না আসে। সবাই যেন সুখ-দুঃখে একসঙ্গে থাকতে পারে। আমরা সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নিতে পারি। আর যেন কোনো মায়ের বুক খালি না হয়।’

আলী হোসেন বলেন, ‘স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শুধু আমার ভাই একাই তো জীবন দেয়নি। আরও বহু মানুষের জীবনের বিনিময়ে স্বৈরাচার-মুক্তির এই সফলতা এসেছে। নূর হোসেন, রউফুন বসুনিয়া, বাবুল এমন অনেক যুবক সে সময় প্রাণ দিয়েছেন। এসব ঘটনার বিচার আমরা আজও চাই।’

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নূর হোসেনের বাবার কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন জানিয়ে আলী হোসেন বলেন, ‘এরশাদ জেলখানা থেকে বেরিয়ে প্রথম আমাদের বাসায় আসেন। তিনি বলেছিলেন-আপনার ছেলে মারা গেছে, আমি সেজন্য অনুতপ্ত এবং ক্ষমা চাই। আমি আপনার ছেলে হয়ে সারা জীবন বাঁচতে চাই।’

২০১৯ সালের ১৪ জুলাই সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

শহীদ নূর হোসেনের মাসহ পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে থাকেন মিরপুর মাজার রোডে। এর আগে তারা রাজধানীর নবাবপুরের বনগ্রামে থাকতেন। নূর হোসেনের বাবা মারা গেছেন ২০০৫ সালে।

এ বিভাগের আরো খবর