ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে বন্ধ হওয়ার ৩৫ দিন পর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাস খুলে দেয়া হয়েছে। সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নতুন করে সিট বরাদ্দ দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
রোববার সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে হোস্টেলে ওঠার অনুমতি পান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা।
হোস্টেল কমিটির তত্ত্বাবধায়ক সহকারী অধ্যাপক ডা. রিজওয়ান রেহান বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।তিনি জানান, ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে হোস্টেলও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়। ২৩ নভেম্বর অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় হোস্টেলের সব সিট বরাদ্দ বাতিল করে শিক্ষার্থীদের নতুন করে আবেদনের জন্য বলা হয়।
শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ অক্টোবর অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সাক্ষাৎকার গ্রহণের সময় নির্ধারণ হয়। শনিবার থেকে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হল বরাদ্দ শুরু হয়।
তিনি বলেন, ‘প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নাছিরাবাদ হোস্টেলে সিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। রোববার সকালে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার শেষে প্রধান ছাত্রাবাসে বরাদ্দ দেয়া হয়। আগামী তিন দিনে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার নিয়ে যাচাই-বাছাই করে সিট দেয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নতুন করে সিট বরাদ্দ দেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সিট একসঙ্গে রাখা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলার আসামি এবং চট্টগ্রাম মহানগরীর বাসিন্দাদের সিটের আবেদন গ্রহণ করা হয়নি।’
নূরশাদ জামান লিখন নামের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কলেজ খোলার পর ঢাকা থেকে এসে হোস্টেল বন্ধ থাকায় মসজিদে ছিলাম। আমার সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিল। এর মধ্যে মসজিদেও তালা দেয়া হয়েছে। এই কদিন অনেক কষ্টে ক্লাস করেছি। অবশেষে হোস্টেল খোলায় বাঁচলাম।’
এর আগে ২৯ অক্টোবর রাত ও ৩০ অক্টোবর সকালে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে দুই দফায় সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষের জেরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়। ৩০ অক্টোবর বিকেল ৫টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
এদিন বিকেলে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়।
এই ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় একটি ও চকবাজার থানায় দুটি মামলা করা হয়েছে। পাঁচলাইশ থানার মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরে দুই দফায় সময় বাড়ানোর পর ২২ নভেম্বর প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। পরদিন অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ঘটনায় জড়িত ৩১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার এবং ২৭ নভেম্বর কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নেয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, ২৭ নভেম্বর কলেজ খোলা হলেও হোস্টেল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েন চট্টগ্রামের বাইরের শিক্ষার্থীরা।