‘আগামীতে মনোনয়ন লাগব না। ভোটও চাওয়া লাগবে না। এমনি পাস করুম। যদি পিছা মার্কা থাকে তবে পিছা মার্কা আনুম, নৌকা মার্কা আনুম না। নৌকা মার্কা না আনলে আমরা পাস করব নিশ্চিত।’
নির্বাচনে পরাজয়ের পর এক সভায় এই বক্তব্য দিয়েছেন মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার আড়িয়ল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দ্বীন ইসলাম শেখ। তিনি আড়িয়ল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
অনুষ্ঠানে দেয়া তার বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এরই মধ্যে। এ নিয়ে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া।
ভিডিওতে তাকে নির্বাচনে পরাজয়ের কারণ সম্পর্কেও বলতে শোনা গেছে। তিনি বলেন, ‘ভোট যা হইছে বাদ, আজকা থেকে পেছনে কী হইছে সেটা দেখব না। আমি আশাবাদী মানুষ, আমি খালি সামনে দেখি। সামনে দেখব এগিয়ে যাব। আজকে আমরা চেয়ারম্যান হাইরা গিয়া মন খারাপ করছে অনেকে। ভাগ্য থাকলে তো আগামীবার উপজেলাও করতে পারি, কী বলেন?
‘চেয়ারম্যানি নিয়া চিন্তা করার কিছু নাই। চাইলে আল্লাহরেও পাওয়া যায়, এটা তো চেয়ারম্যানই। এবারও পারতাম, তয় দুই-চারটা মরতো হয়তো। এ জন্য করি নাই।’
এই বক্তব্য প্রসঙ্গে দ্বীন ইসলাম শেখ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়ন থেকে ১০ জন নৌকা চাইছিলাম। আমি নৌকা পাওয়ার পর বাকি ৯ জনই আমার বিপক্ষে কাজ করেছে। একজন বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল। সবাই মিলে আমাকে অনেকটা ঘরবন্দি করে রাখছিল। আমার ভাগনেকে মারধর করা হয়েছিল।
‘স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী কেউ আমাকে সহযোগিতা করেনি। প্রশাসন থেকেও অসহযোগিতা করা হয়েছে। নৌকার বিপক্ষে কাজ করা নেতা-কর্মীদের বিষয়ে জেলার নেতাদের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলাম। মনের কষ্টে কথা তাই বলেছি।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হালদার নিউজবাংলাকে বলেন, নির্বাচনে পাস-ফেল থাকবে। তবে তার এ বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। দলকে অবমাননা করা হয়েছে। এ বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হাফিজ আল আসাদ বারেক বলেন, ‘অনেক নেতা-কর্মী আমার কাছে ভিডিওটি পাঠাচ্ছেন। নৌকা প্রতীক নিয়ে এমন কথা বলা আমাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক। তিনি আমাদের দলীয় প্রতীক নিয়ে কটূক্তি করেছেন। আমি আশা করি উনি এ বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইবেন। এ বিষয়ে নেতাদের থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে, সে অনুযায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
গত ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে টঙ্গীবাড়ী উপজেলার আড়িয়ল ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিজয়ী হন আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী কাদির হাওলাদার। পরাজিত হন দ্বীন ইসলাম শেখ।